মহামারী করোনাভাইরাসের দাপটে কোণঠাসা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ; মারা যাচ্ছেন শয়ে শয়ে। মৃত্যু এরই মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। তবু নিয়ন্ত্রণে আসছে না কোভিড-১৯ সংক্রমণ। আগামী কয়েক দিনে এ ভাইরাসের ভয়াবহ রূপ যুক্তরাষ্ট্র দেখবে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি।
তিনি বলেন, বর্তমানে কিছু অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাসের বিরক্তিকর উত্থান দেখছে জাতি। তবে সামনের দিনগুলোতে এ সংক্রমণ আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
কোভিড-১৯ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। মারা গেছেন এক লাখ ২৩ হাজার ৪৭৩ জন। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ লাখ ২৪ হাজার ১৬৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৬ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছে।
তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে নতুন করে সংক্রমণ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তরুণ জনগোষ্ঠী, যাদের বয়স ২০-৪০ বছরের মধ্যে।
মঙ্গলবার দেশটির করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের সদস্য ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, কয়েক দিন আগেও একদিনে নতুন করে ৩০ হাজার আক্রান্ত হওয়ার চিত্র দেখা গেছে। এই চিত্রটা আমার কাছে খুবই কষ্টদায়ক। তবে আমরা বর্তমানে টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আরিজোনাসহ অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে করোনার যে ঢেউ দেখছি তা আগামী কয়েক সপ্তাহে ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
বিজ্ঞানীরা যেখানে করোনাভাইরাসের আসছে দিনের ভয়াবহতা নিয়ে সতর্ক করছেন, সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট চলছে উল্টো পথে। সম্প্রতি ওকলাহমায় এক নির্বাচনী প্রচারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, করোনায় সংক্রমণের সংখ্যা সরকারি হিসেবে যাতে কম দেখানো যায়, সে জন্য টেস্টিং কমিয়ে দেয়ার জন্য তিনি তার টিমকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, যত বেশি টেস্ট তত বেশি শনাক্ত। তাই টেস্ট কমিয়ে দিতে বলেছি।
তবে করোনা টেস্টিং কমিয়ে দেয়ার জন্য কাউকে নির্দেশ দেয়া হয়নি বলেও জানান দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক ডা. ফাউসি।
তিনি বলেন, আমি যতদূর জানি, আমাদের কাউকে পরীক্ষা কমিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে আমরা পরীক্ষার হার আরও বাড়িবে দেব।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এটিকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।