বেঁচে থাকার তাগিদে আমরা ভুলে যাই শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। আর আমরা জানি বই মানুষের বড় বন্ধু। অর্থাৎ এটা বলা যায়, সারাদিনের ব্যস্ততার পর মানসিক চাপ কমাতে ও মন প্রফুল্ল রাখতে বই পড়ার অভ্যাস খুবই ফলপ্রসূ।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নুমেরী নুসরাত মনে বলেন, মানসিক অসুস্থতায় বই পড়ার অভ্যাস অনেকটাই প্রশান্তি দিতে পারে। একটি ভালো সাহিত্যের বই একজন অবসাদগ্রস্থ মানুষের মানসিক চাপ কমিয়ে পুনর্জীবিত করে তুলতে সক্ষম হয়।
এছাড়া লেখকরা সব সময়ই বলেন যে কোন ভালো গল্প কিংবা উপন্যাস বা কবিতার বই পাঠে সবধরনের হতাশা বা বিষাদমুক্ত করতে সাহায্য করে।
ডাক্তার নুমেরি বলেন সাধারণত একটি শক্তিশালী সাহিত্য বাস্তব জীবনে রাখতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক ভূমিকা। প্রিয় উপন্যাসগুলো বার বার পড়লে বিশেষ ধরণের বিবলিওথেরাপি বা পুস্তকীয় চিকিৎসা সরবরাহ হয়।
মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করা জরুরি। ডাক্তার নুমেরী নুসরাতের অভিমত অনুযায়ী নিয়মিত বই পড়লে যে ধরনের উপকার হয় সে সম্পর্কে চলুন জেনে নেই-
.প্রতিদিন বই পড়লে কল্পনাশক্তি বাড়ে। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালঝেইমার রোগ এবং স্মৃতিলোপের ঝুঁকি কমায়।
কথায় আছে, যত পড়বে, তত শিখবে। নিয়মিত বই পড়লে প্রচুর শব্দ আয়ত্তে আসে। শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়।
.প্রতিদিন পড়াশোনা করলে নানা পৃথিবীর সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। অসংখ্য বাস্তবতার সাক্ষাৎ মেলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নীরবে ছয় মিনিট বই পড়লে হৃদস্পন্দনের হার ধীর হয় এবং দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
.বই আপনাকে পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে ভুলিয়ে দেয় এবং নিজের গল্পের ওপর মনোনিবেশ করতে সহায়তা করে। নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত রাখে। ফলে জীবন উন্নততরের দিকে ধাবিত হয়।
.বই পড়ার সময় নিশ্চিন্তে ঘুম চলে আসবে। সেটা হবে গভীর ঘুম।
.প্রতিদিন বই পড়লে অনেক তথ্য মাথার মধ্যে গেঁথে যায়। বাস্তবজীবনে যা কাজে লাগে। মন প্রফুল্ল থাকে। বিশ্বকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার সক্ষমতা তৈরি হয়।
.বই পড়লে বিভিন্ন চরিত্র, তাদের পটভূমি, ইতিহাস, কৃষ্টি-কালচার মনে করতে হয়। মস্তিষ্ক অনন্য জিনিস। সহজে সেগুলো স্মরণ করতে সহায়তা করে এটি। নিয়মিত অভ্যাসে স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
.প্রতিদিন বই পড়লে নিজের মধ্যে অন্যরকম ব্যক্তিত্ব তৈরি হয়। শিল্প-সাহিত্যের প্রশংসাসূচক বাণী মুখ দিয়ে বের হয়। এটি কেবল জ্ঞানই বৃদ্ধি করে না, বরং সৃজনশীলতা বাড়ায়।
.পড়াশোনা করলে শুধু শব্দভাণ্ডারই সমৃদ্ধ হয় না, পাশাপাশি লেখনীশক্তি বাড়ে। আপনি যতজন লেখকের বই পড়বেন, ততজনের লেখনির ধরণে প্রভাবিত হবেন। যা আপনার লেখনীশক্তি বৃদ্ধি করবে।
সূত্র: ইত্তেফাক