৫ বিঘা জমি ও মেহেরপুর শহরে বাড়ি করে দিতে না পারায় সেনা সদস্য’র স্ত্রীর মর্যাদা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগে গ্রাম আদালতে বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছে ভুক্তভুগী মেয়ের বাবা মেহেরপুর সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের ফুলচাঁদ আলী।
গত শনিবার সেনা সদস্য মো: সোহান সাইমের বিরুদ্ধে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভুগী ঐ মেয়ের বাবা ফুলচাঁদ আলী বলেছেন, গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে সেনা সদস্য মো: সোহান সাইম ও তার মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ার কারনে রেজিষ্ট্রি না করে স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে ৪ লাখ টাকা বাকীতে দেনমহর নির্ধারন করে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক গত ১২/০৪/২০১৯ ইং তারিখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে জামাতা মো: সোহান সাইম তার বাড়িতে রাত্রি যাপন সহ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে আসছে।
বিয়ের পর ২০২০ সালে সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকুরী পেলে মেয়ের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে চাপ প্রয়োগ করে। মেয়ের সুখ শান্তির কথা ভেবে দুজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে ৫ লাখ টাকা প্রদান করি। জামাতা মো: সোহান সাইম ট্রেনিং শেষ করে ছুটিতে বাড়িতে আসলে মেয়েকে তার বাড়িতে নেওয়ার কথা বললে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
আমার মেয়ে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে গত শুক্রবার (১১.০২.২০২২) আমার মেয়ে জামাতা সেনা সদস্য মো: সোহান সাইমের বাড়িতে গেলে জামাতা সেনা সদস্য মো: সোহান সাইম ও তার পিতা কামরুজ্জামান মারধর ও গালিগালাজ করে ৫ বিঘা জমি ও মেহেরপুর শহরে বাড়ি করে দিতে পারলে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হবে বলে জানিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
নিরুপায় হয়ে স্থানীয় লোকজন ও আত্নীয় স্বজনদের পরামর্শে সোহান সাইমকে বিবাদী করে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করে বিচার চেয়েছেন তিনি।
ফুলচাঁদ আলীর মেয়ে ও সোহান সাইমের স্ত্রী বলেন, গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজে পড়ার সময় ২০১৮ সালে সোহান সাইম নানা ভাবে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এক পর্যায় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের কারনে সোহান সাইম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। দুজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় রেজিষ্ট্রি না করে স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে ৪ লাখ টাকা বাকীতে দেনমহর নির্ধারন করে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক গত ১২/০৪/২০১৯ ইং তারিখে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে সে তার বাবার বাড়ি গাড়াবাড়িয়াতে না নিয়ে আমার বাবার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করার পরামর্শ দেয়। পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে তুলবে বলে প্রতিশ্রতি দিলেও এখন সে যৌতুক দাবি,মারধর ও বিয়ের বিষয়ে সব অস্বীকার করছে। তিনি আরো বলেন স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে তার বাবা আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। আইনের মাধ্যমে তিনি স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে চাঁন।
কুমিল্লা ক্যান্টনমেন (ইউনিট ৩ বির,কোর নং বির) কর্মরত সেনা সদস্য মো: সোহান সাইম বলেন, ফুলচাঁদ আলীর মেয়ের সাথে তার বিয়ে হয়নি। তাকে তিনি চেনেন না।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ে হলে সেনা সদস্য পদে চাকুরী হয়না। এমন নিয়ম থাকলেও বিয়ের পরেও কিভাবে চাকুরী হলো তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসির।
কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মিজানুর রহমান রানা জানান, মেহেরপুর সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের ফুলচাঁদ আলী সেনা সদস্য মো: সোহান সাইমের বিরুদ্ধে বিয়ের পর যৌতুক চাওয়া তার মেয়েকে মারধর সহ বিভিন্ন কারন উল্লেক করে লিখিত অভিযোগ করেছে। লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষকে নোটিশ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।