পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির এসআই মো. নওয়াব আলী পুলিশে যোগ দিয়ে অঢেল সম্পদের পাহার গড়েছেন। তবে তার নিজের নামে তেমন কিছু নেই। তার দুর্নীতির টাকায় তার স্ত্রী বিএনপি নেত্রী গোলজার বেগম এখন কোটিপতি।
দুদকের করা একটি মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান এসআইয়ের কোটিপতি স্ত্রী গোলজার বেগমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এর আগে সকালে গোলজার বেগম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু তার আবেদন নাকচ করে দেন বিচারক।
গোলজার বেগম নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজার চানবাড়ির বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার স্বামী নওয়াব আলী ঢাকায় সিআইডির এসআই পদে কর্মরত।
নওয়াব আলীর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের কেকানিয়ায়। ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন তিনি। পরে প্রমোশন পেয়ে এসআই হয়েছেন। নওয়াব আলী দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা কামালেও তার মালিক সাজিয়েছেন স্ত্রীকে।
দুদক সূত্র আরও জানিয়েছে, নওয়াব আলী তার গ্রামের বাড়িতে নিজের নামে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ জমির ওপর একটি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আর স্ত্রী গোলজারের নামে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুরে ৩৫৪ শতক জমি কিনেছেন। চট্টগ্রাম শহরের লালখানবাজার এলাকায় পার্কিংসহ এক হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, একই এলাকায় ৪ শতক জমি রয়েছে স্ত্রীর নামে। এ ছাড়া গোলজারের নামে একটি মাইক্রোবাসও রয়েছে।
তবে দুদকে জমা দেওয়া হিসাব বিবরণীতে গোলজার দাবি করেছেন, তিনি মিরসরাইয়ের পশ্চিম ইছাখালীর মদ্দারহাটে স্থানীয় সাতজনের সঙ্গে চুক্তি করে একটি জলমহাল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। গোলজার বেগম মাছ চাষ করে এক কোটি ১০ লাখ আয় টাকা করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে মাছ চাষের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও কর কর্মকর্তারা ‘মাছ চাষ করা হয়’ মর্মে প্রতিবেদন দেন।
এ ঘটনায় এসআই নওয়াব আলী, তার স্ত্রী গোলজার বেগম, কর অঞ্চল-১ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) বাহার উদ্দিন চৌধুরী ও কর পরিদর্শক দীপংকর ঘোষকে আসামি করে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দেয়। অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এই চার আসামির বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
পত্রিকায় এ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর আসামি গোলজার বেগম আজ আত্মসমর্পণ করেন। এ মামলায় আগামী ৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে বলে দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানিয়েছেন।