বদলে গেছে গাংনীর বিভিন্ন মার্কেটের চিত্র। শুরু হয়েছে ঈদ উৎসবের আমেজ। খুলে দেওয়া মার্কেটগুলোতে বিরাজ করছে কোলাহলমুখর পরিবেশ। গায়ে গা মিশিয়ে, পায়ে পা লাগিয়ে অবিরাম চলছেন সবাই। সবার লক্ষ্য ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা করা।
অন্যান্য বছরের মতো না হলেও মোটামুটি তিন দিনের ব্যবধানেই সেজেছে দোকানগুলো। এসব দেখে কারো মনে হওয়ার উপায় নেই যে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলছে। ক্রেতা- বিক্রেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মানার বিষয়টি গুরুত্বহীণ। ক্রেতারা স্বাসথ্য বিধি কিছুটা মানলেও মানেছেনা দোকান মালিক ও শ্রমিকেররা। এতে করে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশংকা করছেন চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে যেন করোনার আতঙ্ক মিলিয়ে গেছে। জমে উঠেছে মার্কেটগুলো। কেউ কিনছেন আবার কেউ দেখছেন। অনেক দোকানী আড়মোড়া ভেঙ্গেছেন। পোশাক এবং প্রসাধনীর দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। এসব মার্কেটের অনেক জায়গায় মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। করোনার সংক্রমণ রোধে নেই সামাজিক দূরত্ব । অধিকাংশ দোকানি বা ক্রেতার নেই মাস্ক ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা পেটের দায়েই দোকান খুলেছেন। দীর্ঘদিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করায় সেই ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। তবে স্বাস্থ্য বিধি মানতে নারাজ খরিদ্দাররা।
এসএম প্লাজার কাজল বস্ত্রালয়ের সামনে জনসমাগম দেখা যায়। কোনো ধরনের সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি সেখানে। বিক্রেতাদের ও ক্রেতার মাস্ক নেই।
জানতে চাইলে দোকান মালিক হাফিজুর রহমান কাজল দোকান কর্মচারীদেরকে বকাঝকা করেন ও মাষ্ক পরার জন্য বলেন। তিনি আরো বলেন, সবাইকে বলা হচ্ছে কিন্তু তারা সেটা মানেন না। স্বপ্নচুড়ার স্বত্ত্বাধিকারী আবুল বাশার জানান, ক্রেতাদেরকে বলা হচ্ছে দূরে দূরে থাকার জন্য । এতে অনেকেই রাগ করে চলে যাচ্ছে। খরিদ্দারকে খেপিয়ে বা রাগিয়েতো লাভ নেই।
জামান গার্মেন্টস্ এ গিয়ে দেখা গেছে বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক নেই। জানতে চাইলে তিনি বললেন, মাস্ক আছে, গরম লাগছে। একই কথা জানালেন নেভা ফ্যাসনের কর্মচারীরা। সকলেই যেন মাস্ক পরতে উদাসীন।
পোশাক কিনতে আসা কাস্টদহ গ্রামের গৃহবধু আঞ্জুমান আরা জানান, বেশ কিছুদিন পর মার্কেট খুলেছে তাই দেখতে আসলাম। গেল বছরের পোশাক। নতুন কালেকশন নেই তাই কয়েকদিন পর কিনবো। স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না কেন ? এ প্রশ্নের জবাব না দিয়েই উল্টো প্রশ্ন ‘ কেউ কি মানছে স্বাস্থ্য বিধি?’
শিমুলতলা থেকে স্বপরিবারে এসেছেন নজরুল ইসলাম। কারো মুখে মাস্ক নেই। করোনার প্রভাব বিস্তার আর স্বাস্থ্য বিধি না মানার ব্যাপারে তিনি বললেন, কোন করোনা ফরনা নাই। এটা নিছক গুজব।
গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান স্বপন বলেন, ‘কোথাও কি সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে? যারা কেনাকাটা করতে আছেন তাদেরও সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত।’ তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ^স্ত করলেন।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হামিদুল হক জানান, স্বাস্থ্য বিধি না মানলে করোনার বিস্থার ঘটবে আশঙ্কাজনকহারে। সরকার সব সময় স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার কথা বলছে। মাস্ক ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, মার্কেটে স্বাস্থ্য বিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে বাজার ও মার্কেট কমিটির কমিটির সভাপতিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।