ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৮জন আহত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল চারটার দিকে উপজেলার হরিশপুর গ্রামের লালন বাজার এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
আহতরা হলেন হরিশপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আলামিন হোসেন (৩২), আশান মন্ডলের ছেলে মন্টু মন্ডল (৪৩), জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আফাঙ্গীর বিশ্বাস (৪৬) ও পার্বতীপুর গ্রামের নুপুর মন্ডলের ছেলে বাপ্পী হোসেন (৩২)।
এদের মধ্যে আফাঙ্গীর বিশ্বাস জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এম এ মজিদের অনুসারী এবং অন্যরা সাবেক সাংসদ মসিউর রহমানের ছেলে ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাক বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে আলামিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ওই এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য প্রয়াত মসিউর রহমানের এমপির অনুসারীদের কর্মীসভা চলছিল। সেখানে তাঁর ছেলে ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. ইব্রাহিম রহমান উপস্থিত ছিলেন। একই সময়ে পাশের জটারখালি বাজার এলাকায় সভা চলছিল জেলা বিএনপির সভাপতি ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. এম এ মজিদের সমর্থক ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের। সেখানে দলটির জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আফাঙ্গীর হোসেন এবং উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ উপস্থিত ছিলেন।
পাশাপাশি দু’পক্ষের সভাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সেটি সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ সময় উভয়পক্ষ লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের ৮ জন আহত হয়। এছাড়া বাবু সমর্থকদের সভাস্থলে চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
ডা. ইব্রাহিম রহমান বাবু অভিযোগ করেন, লালন বাজার এলাকায় তাদের কর্মীসভা চলছিল। তখন সেখানে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় মজিদ সমর্থকরা। এ সময় তাদের লোকজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। এ সময় তাদের সভাস্থলের মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আফাঙ্গীর হোসেন বলেন, ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিয়ে সভা করছিল প্রতিপক্ষরা। এ নিয়ে একটু উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। আমি সেটি সামাল দিতে গেলে তারা আমার ওপর আক্রমণ করে।
হরিণাকুণ্ডু হাসপাতালের চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, আহত ৪ জনের মধ্যে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা রেফার করা হয়েছে। তার মাথার পিছনে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। বাকি দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এসময় কয়েকজন পুলিশও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ রউফ খান বলেন, খবর পেয়ে সেখানে আমি এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই। তবে সেখানে বড় ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঈশিতা আক্তারকে মোবাইলে কল করা হলে তিনি সেটি রিসিভ করেননি।