সংস্কারের অভাবে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীন পাকারাস্তার অবস্থা এখন বেহাল দশা। এসব রাস্তায় মানুষ থেকে শুরু করে গাড়ী ঘোড়া চলাচলে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে।
সমস্ত রাস্তার ছাল চামড়া উঠে খানা গর্তে পরিনিত হওয়াই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাগুলোর বেহাল দশা থাকলেও সে দিকে কোন দৃষ্টি নেই কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ১ নং ভায়না ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। লক্ষীপুর থেকে দোবিলা পর্যন্ত ও জোড়াদাহ বাজার হতে বাগআচড়া যাওয়ার রাস্তায় পিচ চোখে পড়ে কদাচিৎ। এসব রাস্তা অসংখ্য খানাখন্দে ভরে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।
হরিনাকুন্ডুর হলবাজার থেকে জোড়াদাহ বাজার পর্যন্ত প্রায় দশ কি.মি সড়ক যান চলাচলের একদমই অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তাটি লালন সড়ক নামে পরিচিত। নিয়মিত অফিস আদালতে যাতায়াত, পন্য পরিবহন, এ্যাম্বুলেন্স সেবাসহ নানাবিধ সেবা পেতে মুলত এই রাস্তাটি ব্যবহার করেই ভায়না, জোড়াদাহ, তাহেরহুদা ও ফলসী ইউনিয়নের বাসিন্দারা হরিনাকুন্ডু উপজেলা শহর ও জেলা শহরে যাতায়াত করে। রাস্তাটির বেহাল দশায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন এই চার ইউনিয়ন পরিষদের লক্ষাধিক মানুষ।
২ নং জোড়াদাহ ইউনিয়নের ভেড়াখালী বাজার হতে ভবানীপুর হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তার ইট উঠে গিয়ে খানাখন্দে ভরে গেছে। ভেড়াখালী বাজার হতে জটারখাল ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত রাস্তারও বেহাল দশা। জোড়াদাহ বাজার হতে হরিশপুরের ভেতর দিয়ে সাতব্রীজ যাওয়ার রাস্তার পিচ উঠি গিয়ে জায়গায় জায়গায় গর্ত হয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে যান চলাচলের। তাহেরহুদা ইউনিয়নের রামনগর বটতলা হতে ইউনিয়ন পরিষদগামী পিচের রাস্তা ক্ষত-বিক্ষত,খানাখন্দে ভরা।
একই অবস্থা ফলসী ইউনিয়নের হরিনাকুন্ডু হলবাজার থেকে চুলকানি বাজার পর্যন্ত রাস্তা, রিশখালী বটতলা থেকে হিঙ্গেরপাড়া, রিশখালী বাজার থেকে গবরাপাড়া, রিশখালী স্কুল থেকে সোনাতনপুর, হরিনাকুন্ডু হাসপাতাল মোড় থেকে ভূইয়াপাড়া, সোনাতন পুর থেকে ডাকবাংলা বাজার, বৈাডাঙ্গা বাজার থেকে ভাতুড়িয়া বটতলা, ভাতুড়িয়া বাজার থেকে ভালকির রাস্তা, শাখারীদহ বাজার হতে চাদপুর ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত রাস্তা।
এ সমস্ত গুরুত্বপুর্ণ রাস্তায় চলাচলের পরিবেশ হারিয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিদিন হাজার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারন মানুষের। এ সমস্ত রাস্তায় যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচল করতে কষ্ট হয়।
এরপরও রাস্তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করার ফলে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
এইসব রাস্তাতে যাত্রী পরিবহণ ছাড়াও মুমূর্ষু রোগী নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে জানা যায়।
জোড়াদাহের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেক সময় তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যেতে না পারায় রোগীর মৃত্যু ঘটে।
যানবাহন চালকরা জানান, এইসব রাস্তাগুলোতে বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এইসব রাস্তা দিয়ে কৃষিপণ্য নিয়ে চলাচলের সময় নসিমন, করিমন, গরুরগাড়ী, অটো ভ্যানসহ যানবাহন গুলো প্রায়ই উল্টে যায়। আবার কখনো কখনো গাড়ির ঝুরো ভেঙ্গে যাত্রীরা আহত হন।
হরিনাকুন্ডু উপজেলার ঘুরে দেখা গেছে গ্রামীণ জনপদের রাস্তা গুলোর করুন দশা হলেও দেখার কেউ নেই।
জনপ্রতিনিধিদের আশার বাণী থাকলেও কোনো পদক্ষেপ দেখছেন না এলাকাবাসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার তাদের নিকট খেতে চাইনি অথচ আমাদের রাস্তাগুলো তো একটু চলাচলের উপযুক্ত করে দেবে।
এ ব্যাপারে হরিনাকুন্ডু থানা ইঞ্জিনিয়ার জনাব মোঃ রাকিব হাসান এর নিকট মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন হরিনাকুন্ডু থেকে ঝাউদিয়া গামী রাস্তার অনেক আগেই টেন্ডার হয়েছে কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরেও রাস্তা শুরু করছে না এবং হরিনাকুন্ডু অন্যান্য রাস্তার কাজ গুলোও চলমান আছে ।