মেহেরপুরে হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় গ্রেফতার দেখানো সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনির ২ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: তারিক হাসান এ আদেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় গ্রেফতার দেখানো সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনির ৭দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আশরাফ আলী। আদালতে আসামি সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রিমাণ্ডের বিরোধীতা করেন তার আইনজীবী। আদালতের রিমাণ্ড আবেদন শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক ২ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আশরাফ আলী জানান, হোটেল আটলাণ্টিকা কাণ্ড মামলার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে আদালতে মিজানুর রহমান জনির ৭দিনের রিমাণ্ড চাওয়া হয়। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ২ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন।
হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ডে ব্লাকমেইলার চার সাংবাদিকের অন্যতম মিজানুর রহমান জনি। এ নিয়ে আসামি প্রিয়া খাতুন ও ছন্দা পৃথক পৃথক ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে জনিকে অভিযুক্ত করেন। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে জনি আত্নগোপনে ছিলেন।
অপরদিকে, সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনিকে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা মামলায় গত ১৮ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে গ্রেফতার করে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের একটা টিম তাকে এনটিভি মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধির ক্যামেরা ছিনতাই ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করে।
গত ২২ নভেম্বর মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিজে বাদি হয়ে একটা মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক রেজ আন উল বাসার তাপস। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানা পুলিশকে এফআরআই এর নির্দেশ দেন। পরে গত ১০ জানুয়ারি হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় জনিকে শোন এ্যারেষ্ট মঞ্জুর করে আদালত।
উল্লেখ্য, ২২ নভেম্বর মউকের একটি চাঁদাবাজী মামলার আসামী হিসেবে হোটেল আটলান্টিকায় অসামাজিক কার্যকলাপের অন্যতম হোতো নাজনিন খান প্রিয়াকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। পরে ওই মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হলে ডিবি পুলিশ মামলার তদন্তকালে ৩০ নভেম্বর মেহেরপুরের ওয়াপদা সড়কে আটলান্টিকা কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন এবং সদর উপজেলার হিজুলী গ্রামের এনামুল হকের মেয়ে ছন্দা খাতুনকে গ্রেফতার করে। ছন্দা খাতুনকে ১৬৪ ধারায় জবাবনবন্দীতে হোটেল আটলান্টিকার অসামাজিক কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরেন। তার জবানবন্দীতে উঠে আসে ভয়ংকর সব তথ্য। হোটেল মালিক মতিয়ার ও তার ছেলে মামুন স্থানীয় কিছু সাংবাদিকের সহায়তায় হোটেলে বিভিন্ন মেয়েদের ব্যবহার করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারণ করে সেগুলো সাংবাদিকদের মাধ্যমে চাদাবাজি করে আসছিলেন।
ছন্দা খাতুনের জবানবন্দী নিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশ হলে মেহেরপুরসহ আশেপাশের কয়েকটি জেলায় সংবাদটি তোলপাড় সৃষ্টি করে। যার রেশ এখনো চলমান। সংবাদে মেহেরপুরের চার সাংবাদিক ও এক আইনজীবীর কথা উঠে আছে। প্রকাশিত ওই সংবাদের চার সাংবাদিকের একজন এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনি।
প্রসঙ্গত, হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ডে পুলিশ এ পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করেছে। আটকৃতরা হলেন- কথিত সাংবাদিক নাজনিন খান প্রিয়া, হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন, হিজুলির ছন্দা খাতুন, হোটেল কর্মচারী হাসিবুল হক জয়, সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনি, নিহাল আল মুকিত ও শাহজাহান আলী।