রাশিয়ার দোর্দণ্ড প্রতাপশালী রাষ্ট্রনায়ক ভ্লাদিমির পুতিন এ নিয়ে চার মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথম দুই মেয়াদে ৮ বছর ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। ২০১২ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংবিধান সংশোধন করে পার্লামেন্টের মেয়াদ ৬ বছর করেন। ২০২৪ সালে তার চতুর্থ দফার মেয়াদ শেষ হবে। সে পর্যন্ত বেঁচে থাকলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দুই দশক পূরণ হবে। মাঝে যে ৪ বছর তিনি প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন না, সে সময়ও তিনি ছিলেন ক্ষমতার খুব কাছাকাছি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে বিশ্বস্ত ও অনুগত একজনকে প্রেসিডেন্ট করে নিজে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ৪ বছর। পরে আবারও প্রেসিডেন্ট পদে লড়ে ক্ষমতায় আসেন। দীর্ঘ এই শাসনকালে সাবেক কেজিবিপ্রধান নিজেকে রাশিয়ার একজন শক্তিশালী শাসকে পরিণত করেছেন। এতেও ক্ষান্ত হননি তিনি।
আবারও নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে তার। শুধু ইচ্ছাই নয়, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ফাঁকফোকর খুঁজছেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি নিজের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। পুতিন ‘রাশা-১’ নিউজ চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পার্লামেন্ট যদি সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করে তা হলে তিনি পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও পারেন।
কোনো কোনো রুশ কর্মকর্তা পুতিনের একজন স্থলাভিষিক্ত খুঁজে বের করার যে চেষ্টা করছেন, সে ব্যাপারে হুশিয়ার করে দিয়ে পুতিন বলেন, তারা যেন এসব বাদ দিয়ে নিজেদের কাজে মনোযোগী হন।
রুশ প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি দেশের সংবিধান সংশোধনের খসড়ায় স্বাক্ষর করেছেন। দেশটির সাংবিধানিক আদালত এই খসড়া অনুমোদন করলে তিনি ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। সেই সঙ্গে ২০৩০ সালের নির্বাচনেও তার অংশগ্রহণের পথ সুগম হবে। সে ক্ষেত্রে তিনি ২০৩৬ সাল গদি ঠিক রাখতে পারবেন।
রাশিয়ার বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, এক ব্যক্তি একটানা দুবারের বেশি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০০০ সাল থেকে দুই মেয়াদে চার বছর করে মোট আট বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এর পর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পালন করতে তিনি নিজের অনুগত রাজনীতিবিদ দিমিত্রি মেদভেদেভকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করে নিজে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ২০১২ সালে মেদভেদেভের মেয়াদ শেষ হলে পুতিন আবার প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসেন।
ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘ করতে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ৪ বছরের জায়গায় ৬ বছর করেন পুতিন। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষ হবে ভ্লাদিমির পুতিনের। এবার আর অনুগত কাউকে প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ না দিয়ে পার্লামেন্টের মাধ্যমে নিজেই ক্ষমতায় থাকার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সুত্র-যুগান্তর