গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৮৭৩ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৫২ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৭৮ জন।
আজ শনিবার (২৩ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ১৬ জন পুরুষ এবং চারজন নারী। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আটজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৫২ জনের।
জানানো হয়, নতুন যে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের চারজন, চট্টগ্রাম বিভাগের আটজন, রংপুর বিভাগের দুইজন, ময়মনসিংহ বিভাগের দুইজন, রাজশাহী বিভাগের দুইজন, সিলেট বিভাগে একজন এবং খুলনা বিভাগে একজন। এঁদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ১৫ জন, বাসায় মারা গেছেন চারজন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিলেন একজন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৯৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৪৮৬ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৯ হাজার ৯৭৭টি। পূর্বের নমুনাসহ এই সময়ে মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৮৩৪টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এক হাজার ৮৭৩ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৭৮ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে দুই লাখ ৩৪ হাজার ৬৭৫টি।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ২৮৬ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন চার হাজার ৩০৫ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৯ জন।
বুলেটিনে জানানো হয়, ঢাকাসহ সারা দেশে মোট আইসোলেশন সংখ্যা ১৩ হাজার ২৮৪টি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫০০টি ও ময়মনসিংহ নার্সিং ডরমিটরিতে আরো ২০০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুতির কাজ চলছে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীতে সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩৪টিতে।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ৩২২ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮৮ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট দুই লাখ ৬০ হাজার ৪১৬ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ পাঁচ হাজার ২৫৯ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৫ হাজার ১৫৭ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে দুই লাখ ১৭ হাজার ২৮৩টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ৭২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৫ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো ২১ জন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ১৪৪ জনে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে তিনজন। এ নিয়ে বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৫ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
এর আগে বুলেটিনের শুরুতে ডা. নাসিমা সুলতানা ধন্যবাদ জানান দেশের চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের বৃহত্তম সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘প্লাটফর্ম অব মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল সোসাইটি’কে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সহযোগী সংগঠন সমূহের সঙ্গে বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাওয়ার জন্য সংগঠনটিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। সূত্র-কালের কণ্ঠ