থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা পত্রিকা পরিবেশক লোকমান হোসেন। শহরের মজমপুর এর গেটে পত্রিকার পাশাপাশি শিশুদের বই সহ বিভিন্ন ধরনের বই হেঁটে হেঁটে ফেরি করে বিক্রি করেন। দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে তিনি এই বই ও পত্রিকা বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত। পত্রিকা ও বই বিক্রি করেই সংসার চালিয়েছেন। দুই মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন এবং বিয়েও দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মজমপুর গেট এলাকায় প্রতিদিন পত্রিকা বিক্রি করি। বই ও পত্রিকা বিক্রি করে মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার মতো উপার্জন হতো। আগের তুলনায় এখন ব্যবসা নেই। লোকসমাগম না থাকায় এ মাসে কোন আয়ও নাই। আমরা মানুষের কষ্টের কথা সবাইকে জানাতে ছুটে চলি। কিন্তু আমার কষ্টের কথা শোনার মানুষ নেই।’
কুষ্টিয়ায় স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্রিকা আছে ৩৭টি। এছাড়াও ২০টি সাপ্তাহিক পত্রিকা ও তিনটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় কুষ্টিয়া থেকে। সবমিলিয়ে এ জেলা থেকে নিয়মিত ৬০টি পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে।
কুষ্টিয়ায় পত্রিকার গুরুত্ব থাকলেও নাগরিকদের হাতে হাতে এসব পত্রিকা পৌঁছে দেওয়া পরিবেশকদের গুরুত্ব তেমন নেই। দেশের ক্রান্তিকালে এই পত্রিকা পরিবেশকদের খোঁজ কেউ রাখছে না।
করোনাভাইরাস প্রার্দুভাবে কার্যত অচল কুষ্টিয়া জেলা। পত্রিকা বের হচ্ছে না। এই বাস্তবতায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে তাদের। বর্তমানে আশিভাগ পত্রিকার পরিবেশক খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে।
প্রবীণ পত্রিকা পরিবেশক রবিউল ইসলাম রবি জানান, তিনি শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে পত্রিকা বিতরণ করেন। প্রতিদিন তার দুইশ পত্রিকা বিক্রি হতো। বর্তমানে পত্রিকা বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কর্মহীন, বেকার। তাই উপার্জনও নেই। ঘরে অভাব।
কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাবলু বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের ত্রাণ তহবিল থেকে পরিবেশকদের কিছু ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। তবে তা যথেষ্ট নয়। এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে পত্রিকা পরিবেশকদের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে।’