ঐতিহাসিক মুজিবনগরখ্যাত মেহেরপুর জেলা এখন উন্নয়নে বাংলাদেশের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরপুর এই জেলার অবকাঠামো উন্নয়নে দিনদিন পাল্টে যাচ্ছে সার্বিক উন্নয়ন।
বিশেষ করে জেলার শিক্ষাঙ্গনে এসেছে আমুল পরিবর্তন। মেহেরপুরের শিক্ষাখাতে গত ৫ বছরের উন্নয়নে জেলার তিনটি উপজেলা এখন স্বকীয় অবস্থানে পৌঁছেছে। সৃষ্টির নান্দনিকতায় জেলায় গড়ে উঠেছে সরকারি বেসরকারি স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোর সুরম্য ভবন। একে একে গড়ে উঠেছে ১৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এখানকার সরকারি, বেসরকারি স্কুল কলেজের ৪ তলা ও বহুতল ভবনগুলি দৃষ্টি কাড়বে। এই তালিকাতে বাদ যায়নি জেলার দাখিল, কামিল ও ফাজিল মাদ্রাসাও। অথচ, এক সময়ে জরাজীর্ণ ভবণগুলো সময়ের ব্যবধানে পেয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
মেহেরপুর শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, জেলার শিক্ষাখাতের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে বিগত পাঁচ বছরে জেলায় ২৫৮ কোটি, ৮৬ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ২২০ কোটি, ২৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকার কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোয়নের লক্ষে জেলার ১৮ টি নির্বাচিত বেসরকারি কলেজ সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প (পূর্ত কাজ) মাধ্যমে জেলার ১৮ টি নির্বাচিত বেসরকারি কলেজের জন্য ২৬ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ইতোমধ্যে ২৫ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোয়নের লক্ষে জেলার ১৮ টি নির্বাচিত বেসরকারি কলেজ সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প (এ্যাপ্রোচ রোড) মাধ্যমে জেলার ১১ টি নির্বাচিত বেসরকারি কলেজের জন্য ৪৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দের কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন (৩০০০ স্কুল) শীর্ষক প্রকল্প (পূর্ত কাজ) এর আওতায় ৫৪ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা ব্যায়ে জেলার নির্বাচিত ২০ টি বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।
নির্বাচিত ২০ টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন (৩০০০ স্কুল) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যায়ে জেলার নির্বাচিত ২০ টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উর্দ্ধমুখী সম্প্রশারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জেলায় নির্বাচিত ২৩ টি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৯ কোটি ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উর্দ্ধমুখী সম্প্রশারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জেলায় নির্বাচিত ২৩ টি বিদ্যালয়ের আসবাব পত্র তৈরী ও বিতরণ করা হয়েছে। যেখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৫ কোটি ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
নির্বাচিত ১২ টি মাদ্রাসা সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত ১২ টি মাদ্রাসা সমূহের উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। যেখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৯ কোটি ৭৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
কারিগরী অধিদপ্তারাধীন ৬৪ টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ(টিএসসি) স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রক্ল্পের আওতায় ১৫ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে জেলায় একটি কারিগরী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপন করা হয়েছে।
সরকারি কলেজ সমূহের বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ (২০০ সরকারি কলেজ) শীর্ষক প্রক্ল্পের আওতায় ১৫ কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দে মেহেরপুরে সরকারি কলেজে কাজ করা হয়েছে।
নির্বাচিত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের উন্নয়ন (৩২৩ সরকারি স্কুল) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৮২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
রাজস্ব খাতের আওতায় ৩৬ কোটি ৫১ লাখ ছয় হাজার টাকা বরাদ্দে সরকারি /বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহের নতুন ভবণ নির্মানের (মাউশি) কাজ চলমান। ইতোমধ্যে ৪২ টি বিদ্যালয়ের বিল্ডিং কাজ শেষ হয়েছে।
রাজস্ব খাতের আওতায়১১ কোটি ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দে জেলার ১১ টি সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
রাজস্ব খাতের আওতায় ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যায়ে সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (সরকারি কামাশি) শীর্ষক প্রকল্প একটি বিদ্যালয়ের নতুন ভবণ নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া রাজস্ব খাতের আওতায় ৭ টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১কোটি সাড়ে ৪৭ লাখ টাকা বরাদ্দে মেরামত ও সংস্কার কাজ করা হয়েছে। রাজস্ব খাতের আওতায় বেসরকারি ৯৬ টি বিদ্যালয়ে ৮ কোটি সাড়ে ৪৭ লাখ টাকা ব্যায়ে সংস্কার ও মেরামত করা হয়েছে।
রাজস্ব খাতের আওতায় ১৫ টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যায়ে মেরামত ও সংস্কার কাজ করা হয়েছে। মাওশির উদ্যোগে জেলার ৯০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯ কোটি ৫১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যায়ে উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।
মাওশির উদ্যোগে ৬১ টি সরকার ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২ কোটি ৬১ লাখ ১৭ হাজার টাকা ব্যায়ে আসবাব পত্র তৈরী ও বিতরণ করা হয়েছে।
মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যালস্কুল এন্ড কলেজেরজন্য ৭ লাখ ৮ হাজার টাকা ব্যায়ে আসবাব পত্রপ্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ৩ টি বেসরকারি কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা ব্যায়ে আসবাব পত্র প্রদান করা হয়েছে।
জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুরম্য বিল্ডিং তৈরী, সংস্কার ও আসবাবপত্র প্রদানসহ নানাবিধ উন্নয়ন করার ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
মেহেরপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাকিবুল আহসান বলেন, আমাদের বিভাগের উন্নয়ন কাজগুলো স্বচ্ছতার সাথে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে সাংবাদিকদেরও সহযোগীতার কামনা করছি।