নিজের দেশের অর্থনীতিই সামাল দিতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র। যুক্তরাষ্ট্রকে ধসিয়ে দিতে তিনটি বিপদ আসছে। যদিও ডেমোক্র্যাটপন্থী অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৪ সালে মন্দা এড়াতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি তিনটি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। প্রথমত, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হারের বৃদ্ধি ও এর প্রভাবের মধ্যে সবসময় দেরি। ২০২৩ সালে ভোক্তা ও কোম্পানিগুলোর সঞ্চয় ছিল, যা তাদের অর্থায়নের প্রয়োজনকে সীমিত করেছিল। ২০২৪ সালে তাদের ‘থিনার বাফার’ থাকবে এবং উচ্চ হারে তাদের এক্সপোজার বৃদ্ধি পাবে। দ্বিতীয়ত, যদিও ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়ানো শেষ করে ফেলেছে। তবে প্রকৃত হার ক্রমশ আরও সীমাবদ্ধ হয়ে উঠবে কারণ মূল্যস্ফীতি কমছে। তৃতীয়ত, বেকারত্বের হার বাড়ছে এবং ফের ধীরগতির দিকে এগোচ্ছে অর্থনীতি।
২০২৩ সালের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল যে, এটি পুরোপুরি মন্থর প্রবৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ যা হতে পারে, তা হলো মন্দা। মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে গেলে এমনটি হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় ২% প্রবৃদ্ধিতে চলতে থাকে দেশটি। এখন মার্কিনীরা আশায় বুক বেঁধেছে কারণ, মুদ্রাস্ফীতি ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৭% থেকে ১ বছরে ৩%-এ নেমে এসেছে। কিন্তু এই হারকে ঠেলে ধাক্কিয়ে ২%-এ নামিয়ে আনা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ভাড়ায় কমানোর প্রভাব এর মধ্যেই মুদ্রাস্ফীতির ওপর পড়েছে, যা ২০২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কঠিন চাকরির বাজারে স্বস্তির মজুরি ধীরে ধীরে লাভের দিকে নিয়ে যাবে। তাই ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ২%এর নিচে না নামলেও কমে আসবে। সম্ভবত ২০২৪এর মাঝামাঝি সময়ে সুদের হার কমার সুযোগ তৈরি হবে।
কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, আগামী বছরের জন্য তুলে রাখা এই পূর্বাভাসগুলো কীভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। অর্থনৈতিক নীতিতে মার্কিন ভোটাররা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটদেরকে যে কম নম্বর দিয়েছে তা হতাশাজনক। ১০ জনের মধ্যে চারজনেরও কম মার্কিন নাগরিক বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের অর্থনীতি পরিচালনার পদ্ধতির সঙ্গে একমত।
বাইডেনের আমলে যতদিন মুদ্রাস্ফীতি কমতে থাকবে, ততদিন মার্কিন ভোটারদের মন গলানোর সময় আছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি মন্দা এড়াতে পারে, তাহলে নভেম্বরে নির্বাচনে জো বাইডেন হালে পানি পেতেও পারেন। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য আর দ্রুত বাড়ছে না ঠিকই। কিন্তু ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জো বাইডেন যখন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন তখনকার থেকে দ্রব্যমূল্য এখনো প্রায় ২০% বেশি৷ ৭০-এর দশকের শেষের দিকে জিমি কার্টারের আমলের পর দ্রব্যমূল্যের এত বাড়াবাড়ি আর হয়নি।