বিদেশে অর্থপাচার ও জঙ্গি অর্থায়ন রোধে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক দ্য ব্যাসেল ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স। প্রতিষ্ঠানটি নভেম্বর মাসে প্রকাশ করা ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে এতথ্য জানায়। ২০২২ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ দশমিক ৭৫। চলতি বছরের সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৫ দশমিক ৮০। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার উন্নতি হয়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের অবস্থান ছিল ভয়াবহতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষ তিনে।
মিয়ানমারের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ডিআর কঙ্গো ও হাইতি। চলতি বছরের তালিকায় ১৫২টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হাইতি। এরপরই পর্যায়ক্রমে চাদ ও মিয়ানমারের অবস্থান। এছাড়া সুচকে ভিয়েতনাম, চীন, ভুটান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকাকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ অবস্থান করছে ৪৬ নম্বরে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক দ্য ব্যাসেল ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স গত ১৩ নভেম্বর এ তালিকা প্রকাশ করে। বিশ্বের ১৫২টি দেশের ওপর এ র্যাংকিং করা হয়। এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের অবস্থান ২৭, পাকিস্তান ৬১ ও শ্রীলঙ্কা ৬২তম অবস্থানে রয়েছে। তবে এই তালিকায় ভারত, নেপাল, আফগানিস্তানের নাম নেই। আর প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ১১৯ ও যুক্তরাজ্য ১৪০তম। সবচেয়ে ঝুঁকিহীন দেশের তালিকায় রয়েছে ফিনল্যান্ড, সুইডেন, আইসল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও স্লোভেনিয়া।
সংস্থাটি ১২ বছর ধরে র্যাংকিং তালিকা তৈরি করে আসছে। একটি দেশের পাঁচটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে র্যাংকিং দেয়া হয়। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা পরিপালনে ৬৫, ঘুষ ও দুর্নীতি আর্থিক স্বচ্ছতা ও মানদণ্ড, আইনগত ও রাজনৈতিক ঝুঁকিতে ১০ করে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় পাঁচ নম্বর রয়েছে।
বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সূচকে উন্নয়নের কারণ হিসেবে আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কাঠামোর মানোন্নয়নের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে, বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক অঙ্গীকার, আন্তঃসংস্থার কাজের সমন্বয়, আর্থিক খাতে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের পর্যাপ্ত লোকবল ও অর্থের সংস্থান ভূমিকা রেখেছে।
উল্লেখ্য, এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিংয়ের (এপিজি) মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশন রিপোর্ট মোতাবেক বাংলাদেশ এফএটিএফের ৪০টি সুপারিশের বিপরীতে ৮টিতে কমপ্লায়েন্ট, ২৭টিতে লার্জলি কমপ্লায়েন্ট এবং ৫টিতে পার্শিয়ালি কমপ্লায়েন্ট রেটিং পেয়েছে। বাংলাদেশ এফএটিএফের ৪০টি সুপারিশের সবকটিই বাস্তবায়ন করেছে।