অ্যাপল ব্যবহারকারীদের সুরক্ষিত তথ্যে প্রবেশাধিকার চেয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তদন্তের স্বার্থে আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য যে কোনো প্রতিষ্ঠান।
তবে এতে যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অ্যাপল ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কারণে প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে অ্যাপল। ‘অ্যাডভান্সড ডাটা প্রোটেকশন’ নামে পরিচিত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শুধু অ্যাপল ব্যবহারকারীর নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকেই তথ্য দেখা সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটিও গ্রাহকদের সংরক্ষিত তথ্য দেখতে পায় না।
তবে গ্রাহকদের সেই ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে বসেছে যুক্তরাজ্যসরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘ইনভেস্টিগেটরি পাওয়ারস অ্যাক্ট’ এর আওতায় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলকে আনুষ্ঠানিক নোটিশ দেয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য যে কোনো প্রতিষ্ঠান।
তাই প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য সরকারকে সরবরাহ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তথ্য পর্যবেক্ষণের জন্য এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।
যুক্তরাজ্যের নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই সরকারের কাছে চলে যেতে পারে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ প্রযুক্তির ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নীতির ওপর সরাসরি আঘাত।
এছাড়া প্রযুক্তি খাতে এমন নজরদারির নজির তৈরি হলে তা বিশ্বের অন্য দেশের সরকারও একই ধরনের দাবি উত্থাপন করতে উৎসাহিত করবে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, সুরক্ষিত তথ্য ফাঁস করা হলে শুধু সরকার নয়, সাইবার অপরাধীরাও কাজে লাগাতে পারে। এতে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও অনলাইন প্রতারণার ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে।
এর আগে অ্যাপলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নমনীয় করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিষ্ঠানটি। ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানায় অ্যাপল। তবে যুক্তরাজ্যের নতুন পদক্ষেপ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ নীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: ইত্তেফাক