রমজান মাস ও ঈদের কেনাকাটাসহ জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে ও জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে গাংনী উপজেলা শহরের শহীদ রেজাউল চত্ত¡রে আজ মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিক্ষোভ ও আগামীকাল বুধবার ডাকা হরতাল কর্মসূচী স্থগিত করেছে গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগ।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন আজ মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস কনফারেন্স করে এ কর্মসূচী স্থগিত ঘোষণা করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল, গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি মাষ্টার, বামন্দী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, গাংনী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু, সাহারবাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সাইফুজ্জামান শিপু,রাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সামসুজ্জামান মঙ্গল, আওয়ামীলীগের বিশিষ্ট নেতা মনিরুজ্জামান আতুসহ আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী।
বক্তব্যে এমপি খোকন বলেন, আমরা সবাই মুসলিম পরিবারের সন্তান। একদিকে রমজান মাস। অন্যদিকে সন্ধ্যার দিকে রমজানের কেনাকাটা করে থাকে মানুষ। জনস্বার্থের কথা বিবেচনা ও প্রশাসনের আস্বাসে সন্ধ্যায় ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশ স্থগিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, রমজানের রোজা রেখে ইফতারের পর মানুষ যখন ইফতার করে নামাজ শেষে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ঠিক তখনি কতিপয় দূর্বৃত্তরা আমাদের কর্মীদের উপর গুলি বর্ষণ করে।
এঘটনায় পৌরবাসি, স্থানীয় ব্যবসায়ী, জনতা ও সাধারণ মানুষ দূর্বৃত্তদের প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং জনগণের বিক্ষোভের মুখে অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেনকে থানা হেফাজতে নেন পুলিশ।
পরে মোশাররফ হোসেনের সাথে কথা বলে বিশেষ শর্তে তাকে পুলিশ মুক্তি দিয়েছেন। এ ধরণের আর কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা পরিস্থিতি যাতে না ঘটে সেদিকে প্রশাসন খেয়াল রাখবেন বলেও আমাদের আসস্থ্য করেছেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আমরা প্রশাসনের কথায় বিশ্বাস রেখে এবং রোজা মাসের কথা বিবেচনা করে এই কর্মসুচী স্থগিত করা হয়েছে। বাজারে এখন ঈদের কেনাকাটা চলছে। সন্ধ্যার পর বাজারের বিক্রি বৃদ্ধি পাই। প্রশাসনের কথা বিশ্বাস করে ও জনস্বার্থের সবদিক বিবেচনা করেই কমসূচী স্থগিত করা হলো। নেতা কর্মীদের ঘটনার পর্যবেক্ষণ ও শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি মোশাররফ হোসেনকে বলেন গাংনীর শান্ত পরিবেশকে যেনো কোনোভাবে অশান্ত না করতে পারে সেজন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি রাখার আহবান জানান তিনি। জনগণের উদ্যোশ্যে তিনি বলেন আমাদের সচেতন হতে হবে। কোনো চাঁদাবাজ, ধান্দাবাজ ও দুষ্ট লোকেরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না। তারা যেনো গাংনী উপজেলা শহরের এই সমাজকে কলুষিত করতে না পারে। ঈদের এই উৎসব যেনো ভুলন্ঠিত করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানান। ছোট খাটো ঘটনা নিয়ে যেনো বড় কোনো
তিনি প্রশাসনের প্রতি আহবান করে বলেন সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক না কেনো, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ বা ছাত্রলীগ যারাই আইন বিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করবে সে যত বড় নেতা বা পদ পদবী ধারি লোক হোক তাদের প্রতি আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। খারাপ লোকের বিরুদ্ধে প্রশাসন নির্বিঘেœ নির্ভয়ে বিনা বাঁধায় ও নির্ধিদায় আইনী ব্যবস্থা নিলে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবেনা। আমরা চাই জনগণের শান্তি। আমরা চাই জনগণ নির্ভিঘেœ ব্যবসা করবে। জনগণ নির্বিঘেœ তাদের ঈদের কেনাকাটা করবে। রোজাদাররা যেনো মসজিদে গিয়ে তারবীর নামাজ আদায় করতে পারে সেদিকে সবাইকে লক্ষ রাখতে হবে। দু একটি গাঁজাখোর ভুঁইফোড় নেতার কারণে আজকে দলের ও কর্মীদের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এটা আমরা চাইনা। প্রশাসন এসব দু:স্কৃতিকারীদের প্রতি নজর রাখবেন এবং কঠোর হস্তে দমণ করবেন।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর গাংনী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন ও স্থানীয় কিছু নেতা কর্মীদের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে গাংনী উপজেলা শহরের জেলা পরিষদের মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় মোশাররফ হোসেনের অফিস থেকে দু রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেন। পরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ রাস্তায় নেমে এসে মেহেরপুর কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ মিছিল করেন। এক পর্যায়ে গাংনী থানা পুলিশ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেনকে থানা হেফাজতে নেন। তবে প্রাথমিকভাবে তদন্ত শেষে মোশাররফ হোসেনকে গভীর রাতে ছেড়ে দেন।