‘আইলারে নয়া দামান আসমানেরও তেরা, বিছানা বিছাইয়া দেও শাইল ধানের নেড়া, দামান বও দামান বও’ নেটদুনিয়ায় ভাইরাল এই গানটি মানুষের মুখে মুখে আর একের পর এক ভিডিও হচ্ছে গানটি দিয়ে।
পুরনো গান হলেও নতুন করে গানটি আবারো মানুষের মন জয় করে নিয়েছে। নতুন করে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন সিলেটের দুই উদীয়মান শিল্পী প্রবাসী মুজা ও তসিবা।
তবে গানটির নতুন এই ভার্সনের শিল্পীর রয়েছে আক্ষেপ। গান ও নিজের স্বপ্নের কথা কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে তুলে ধরেছেন তসিবা বেগম।
ভাটির মেয়ে তসিবা বেগম। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজারের কামারগাঁও গ্রামে জন্ম। বেড়ে উঠা সিলেট নগরীর খাদিম নগর এলাকায়। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে তসিবা মেজ। ছোটবেলা থেকে গানের প্রতি আলাদা একটা টান ছিল তার। সেই টান থেকে গান গাওয়া শুরু। বাবা-মা সংগীতপ্রিয় হওয়ায় তেমন কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়নি তাকে।
দীর্ঘদিন পর টিকটক ভিডিওয়ে বাজনা ছাড়া গান ও সিলেটের অঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে ভাইরাল হয়ে যান তিনি। সম্প্রতি তার গান শুনে প্রবাসী শিল্পী মুজা যোগাযোগ করেন। পরে দুজন এই গানে কণ্ঠ দেন। কথা ছিল গানটি নিয়ে বড় পরিসরে ভিডিও করার। কিন্তু তার আাগেই গানটি ভাইরাল হয় এক যুবতীর বিয়ের অনুষ্ঠান ও ডাক্তারদের নাচের ভিডিও। বিভিন্ন টিভি ও পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হলেও নাম আসেনি তসিবার। এতে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।
তসিবা জানান, টিকটকের মাধ্যম খোলা গলায় গান গাওয়া। সেখানে আমার বিভিন্ন ধরনের গান রয়েছে। তার মধ্যে একটি আইলারে নয়া দামান। প্রবাসী শিল্পী মুজা ভাইয়ের কথায় সিলেট থেকে গানটি রেকর্ড করে দেই। পরে মুজা ভাইয়ের ইউটিউবে গানটি প্রকাশিত হয়। মুহূর্তে টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে গানটি ভাইরাল হয়। সবাই ক্রেডিট নিচ্ছে আমরা যে গান গাইলাম কেউ তো আমাদের কথা বলছে না।
তিনি বলেন, সবার ভাগ্যে সব জোটে না। আমার বেলাও তাই হয়েছিল। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম কোথাও কোনো সুযোগ হয়ে ওঠেনি। এবার যখন হলো তখন অন্যরা সেই সুযোগও নিতে চাচ্ছেন। আমার অনুপ্রেরণা বাবা-মা আত্মীয়-স্বজনের সাপোর্ট। সবার সাপোর্টে আজ আমার এই জায়গায় আসা।
তসিবা বলেন, গান নিয়ে দীর্ঘদিনের ইচ্ছে থাকায় এখনো কাজ করছি। বাসায় বসে বসে ভিডিও করে ইউটিউব ও টিকটকে আপলোড করছি। যেহেতু টিকটক থেকে আমার এই সুযোগ হয়েছে। তাই আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। প্রত্যেক মানুষের বিভিন্ন ধরনের মেধা থাকে সেটা কেউ কাজে লাগাতে পারে আর কেউ পারে না।
তিনি আরো জানান, গানটি ইউটিউবে প্রকাশের পর দেখতে পাই যে ছায়াছবি নামের একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব পেজে দেওয়া এই ভিডিও চিত্রে খুলনার এক কনের বন্ধু-স্বজন নারীদের এই গানে নাচতে দেখা যায়। পরে ডাক্তারদের নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অথচ অনেকেই বলেছেন এই গানটি না কি উনারা নিজেই গেয়েছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, স্বপ্ন প্রত্যেকে দেখেন কিন্তু বাস্তব করাটা কঠিন। আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল ভালো প্ল্যাটফর্মে কাজ করার। যদি সুযোগ পাই কাজ করব। আল্লাহ আমার স্বপ্নের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। সামনে ভালো আরো কিছু গান নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।