মেহেরপুরের গাংনীতে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে সাহাদুল ও জাহারুল নামের আপন দুই ভাই নিহত হয়েছেন। এ সময় কমপক্ষে আহত হয়েছেন নারীসহ ২০ জন। সোমবার (০৮ নভেম্বর) সকাল ৯টার সময় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৭ নং ওয়ার্ডের লক্ষি নারায়ণপুর ধলা গ্রামে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী ও বর্তমান মেম্বার আজমাইন হোসেন টুটুল ও সাবেক মেম্বার আতিয়ার রহমানের সমর্থকদের সংঘর্ষে আজমাইন হোসেন টুটুল পক্ষের সুলতান হোসেনের দুই ছেলে সাহাদুল (৫৫) ও জাহারুল (৫৭) নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ২০ জন। আহতদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সাহাদুলের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন জানান, বর্তমান মেম্বার আজমাইন হোসেন টুটুলের লোকজন সকালে ভোট চাইতে গেলে আতিয়ার রহমানের লোকজন অতর্কিত হামলা করে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাহাদুল ও জাহারুল। নিহতদের বাড়ি ঘরেও হামলা চালানো হয়। ঘটনার পর পরই গাংনী র্যাব ক্যাম্প কমাণ্ডার এএসপি তারেক আমান বান্নার নেতৃত্বে র্যাবের একটি টীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আতিয়ার রহমানের বাড়ি থেকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত ১১টি ধারালো অস্ত্র, ২টি টেটা, একটি বল্লম ও তিনটি মাথাল উদ্ধার করে। ক্যাম্প কমান্ডার বলেন, হত্যাকারীদেরকে আটকের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধলা গ্রামটি পুরুষ শুণ্য। আতিয়ার গ্রুপের কোন নারী পুরুষ ঘরে নেই। যার যা ছিল তা নিয়েই পালিয়েছে। শুধু নিহতের পরিবারের লোকজন বিলাপ করছেন। গৃহবধু বিলকিছ জানান, টুটুল মেম্বর ও আতিয়ারের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। এ কারণে ২০১০ সালে টুটুলের ভাই সেন্টু এবং ২০১৭ সালে এনামুল হক নইলু আতিয়ার রহমানের লোকজনের হাতে খুন হয়।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, লাশ দুটি ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা স্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১২ জনকে থানায় নেয়া হয়েছে। কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরকে আটক দেখানো হবে।
মেহেরপুর পুলিশ সুপার রাফিউল আলম বলেন, সংঘর্ষের বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকায় পুলিশ র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।