গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, মত প্রকাশের কারণে কাউকে পিটিয়ে হত্যা সংবিধানের ওপরে আঘাত।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণফোরাম।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আবরার হত্যার ‘তদন্ত করে সত্যিকারের ঘটনা উদ্ঘাটন করতে হবে। এটা কোনো দলীয় বক্তব্য নয়। ১৬ কোটি মানুষের একজন হিসেবে আমি এই দাবি জানাচ্ছি’।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লেজুড়বৃত্তি করা ছাত্ররাজনীতি আমরা কোনোদিনই চাই না। তবে স্বাধীন ছাত্ররাজনীতি থাকতে পারে’।
আবরার হত্যাকা-ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বিচার বিভাগীয় তদন্তের সঙ্গে অন্যরাও থাকতে পারেন’।
দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিতে আপনার দলের সংসদ সদস্য পদত্যাগ করবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে’।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের মতো আচরণ করছে। হলে হলে টর্চার সেল। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজের হোস্টেলগুলোতে টর্চার সেল রয়েছে। টার্গেটে থাকা শিক্ষার্থীকে টর্চার করার আগে দেয়া হয় বিরোধী কোনো সংগঠনের তকমা। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক, রাজনৈতিক ভ-ামি ও কৌশলী প্রতারণা।
অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, সার্বিকভাবে বিশ্লেষণ করলে দেশ ধ্বংসের মুখোমুখি। জনগণের মালিকানা ছিনতাই করে ক্ষমতা দখলের কারণে গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে যেতে বসেছে। সুশাসন ও জবাবদিহিতা নেই। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের সব অঙ্গ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক ন্যূনতম ব্যবস্থার পরিবর্তে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ক্ষমতা যেখানে কেন্দ্রীভূত দুর্নীতির মহোৎসব সেখানে দৃশ্যমান। বর্তমান ভিন্নমত দমন, মিথ্যা মামলা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, সভা-সমাবেশে বাধা-নিষেধ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরির মাধ্যমে সরকার প্রকাশ্যে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে। দেশে ক্যাসিনো সংস্কৃতি চলছে। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সায়ীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজবাহ উদ্দিন, মহসীন রশিদ, মোকাব্বির খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারি হামিম, ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
-নিজস্ব প্রতিনিধি