মেহেরপুর জেলা দুর্যোগপ্রবণ ও কৃষিপ্রধান একটি অঞ্চল। এ জেলায় কোন আবহাওয়া অফিস না থাকাতে, পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার আবহাওয়া অফিস থেকে এ জেলার আবহাওয়া সংক্রান্ত দৈনিক তথ্য সংগ্রহ করতে হয়।অনেক সময় দৈনন্দিন তথ্য উপাত্ত সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। তাই আবহাওয়া সংক্রান্ত নিখুত তথ্য উৎপাত্র সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য মেহেরপুরে একটি ওয়েদার ডিসিসন সাপোর্ট সিস্টেম স্থাপন করা হয়। ২০২২ সালে তৎকালীন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সিস্টেমটির কন্ট্রোল রুম উদ্বোধন করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখান থেকে আবহাওয়ার কোন তথ্য উপাত্ত না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অনেকে। সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।
অত্যাধুনিক ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম স্থাপনকালে বলা হয়েছিলো প্রাত্যহিক জেলার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড সহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ সম্পর্কে আগাম তথ্য দেবে যন্ত্রটি। ফলে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি কমবে। কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে। এছাড়াও সিস্টেমটির সাহায্যে মেহেরপুরে বজ্রপাত, ঝড়, ঘুর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, ভুমিকম্প, প্রাকৃতিক ভূগর্ভস্থ পানি দূষণসহসহ বিভিন্ন প্রকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।
২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর কন্ট্রোলরুমের উদ্বোধনকালে মেহেরপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মনসুর আলম খান বলেছিলেন , অত্যাধুনিক এই সিস্টেমটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকলেও বাংলাদেশের মধ্যে মেহেরপুরই হচ্ছে প্রথম জেলা, যেখানে এই সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। মেহেরপুর জেলায় আবহাওয়া অফিস না থাকতে, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ঐকান্তিক চেষ্টার ফসল হিসেবে জনস্বার্থে ডিসি অফিসে কন্ট্রোল রুমটি স্থাপন করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে লোকবল না দেয়া পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের দুইজন লোকবল দিয়ে সিস্টেমটির
কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ‘
তবে এই ওয়েদার ডিসিসন সাপোর্ট সিস্টেম বাংলাদেশের মধ্যে মেহেরপুর জেলাতে পাইলোট প্রকল্প হিসাবে স্থাপন করা হলেও এটি থেকে দৈনন্দিন সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও জানা সম্ভব হয় না।
দৈনিক লাখোকন্ঠ ও শিক্ষার্বাতার জেলা প্রতিনিধি এস এম রফিকুল আলম বলেন, ‘ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেমটি কি সেইটা আমি নিজে জানি না। প্রচারপ্রচারণার অভাব আছে। যন্ত্রটি কৃষক ও সাধারণ মানুষের কিভাবে উপকারে আসতে পারে এনিয়ে ব্যাপক প্রচারণার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয়। ‘
মেহেরপুর জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি তোজাম্মেল আজম বলেন, ‘এত অত্যাধুনিক ও ব্যয়বহুল একটি যন্ত্র মেহেরপুরে থাকার পরও আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্যের জন্য আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায় যোগাযোগ করতে হয়। এটা খুবই দুঃখজনক। আশা করছি আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটিয়ে শীঘ্রই ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেমের পূর্ণ সুবিধা পাবে মেহেরপুরবাসী।’
সিস্টেমটির স্থাপন কাল থেকে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত সহকারি কমিশনার রিফাত জাহান বলেন, ‘আমরা লোকবল চেয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি।কিন্তু এখনো কোন লোকবল না পাওয়াতে সিস্টেমটির কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ‘
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম হাসান বলেন, ‘ওয়েদার ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেমটি একটি প্রকল্পের আওতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাময়িকভাবে স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পরবর্তীতে কোন সিদ্ধান্ত ও জনবল দেওয়া হয়নি। এজন্যই মানুষ কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।