জাসদ সভাপতি ও কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসন থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের হয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাসানুল হক ইনু ভোটে পরাজিত হয়ে এই নির্বাচনকে “কারচুপি” বলে অভিহিত করেছেন।
ইনু বলেন, “আমি জনগণের রায়ে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছি। আশা করি, এটা সবাই তদন্ত করে দেখবেন এবং প্রতিকার করবেন।”
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরের পর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা জাসদ কার্যালয়ে নির্বাচন পরবর্তী সাংগঠনিক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাসানুল হক ইনু বলেন, বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া সারা দেশে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। এই মতের সাথে আমি একমত। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি, বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত যে কারচুপির ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমরা এলাকা কুষ্টিয়া-২ পড়েছে। এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মস্তান বাহিনী ভোটের সাত দিন আগে থেকে যে আতঙ্ক চালাচ্ছে সেটাও বন্ধ করা সম্ভব হয়নি এবং ভোটের দিন ১৬১ কেন্দ্রে মধ্যে অস্বাভাবিক ভোট প্রদার লক্ষ্য করা গেছে। যা কারচুপির মাধ্যমে করা হয়েছে। এ বিষয়ে বারবার প্রতিবাদ করার পরেও, কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
নির্বাচনের কোনো রাজনৈতিক প্রভাব জোটে পড়বে না উল্লেখ করে জাসদ সভাপতি বলেন, “ নির্বাচন নিয়ে জোটের শরিকদের মধ্যে যে বিভ্রান্তি ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, সেটা অবশ্যই নিষ্পত্তি করতে হবে। একই সঙ্গে জোটের প্রার্থীর এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুন্ডাবাহিনীর যে আক্রমণ, হুমকি-ধমকি অত্যাচার শুরু হয়েছে, এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তা না হলে জোটের অভ্যন্তরে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, ঢাকায় গিয়ে জোটের বৈঠকে কথা হবে। যেহেতু আমরা জোটের শরিক সেহেতু এলাকায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থা থাকা উচিত না। জোটের প্রার্থীর বিরদ্ধে অনেকক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব বিরোধিতা করেছে। এটা আমরা নজরে আনবো। এটা তাদের দলীয় বিশৃঙ্খলা, সমাধান করার আহ্বান জানাবো।
এ সময় জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপন, মিরপুর উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ আলীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর ও ভেড়ামারা) আসনে নৌকা প্রতীকে পরাজিত হয়েছেন ১৪ দলীয় মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন।