আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগবাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া স্কুল ফান্ডের টাকায় কেনা জমি স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রিসহ শিক্ষকদের বেতন বন্ধ রেখেছে ওই অধ্যক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এসব অভিযোগ তোলেন।
তারা বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অধ্যক্ষ বনে গেছেন। দেশের পটপরিবর্তনের পর শিক্ষক ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা তাঁর বিষয়ে মুখ খুলতে বসেছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে আলমডাঙ্গার জামজামী গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রামের শাহাদৎ হোসেন মন্টু ৪২ শতক ও মঙ্গল সর্দ্দার নামের একব্যক্তি ৩০ শতক জমি দান করেন। গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার পর প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মহিবুল ইসলাম। তিনি স্কুলের পাশে প্রতিষ্ঠানের টাকায় নবিরন নেছা নামের এক মহিলার নিকট থেকে ৩২ শতক জমি ক্রয় করেন। ওই জমি ক্রয়ের সময় প্রধান শিক্ষক মহিবুল ইসলাম তার স্ত্রী জেসমিন আরার নামে রেজিষ্ট্রি করেন। কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠানে কলেজ শাখা খোলা হয়। কলেজ শাখা খোলার সময় মহিবুল ইসলাম তার স্ত্রীকে দিয়ে জমিটি কলেজের নামে রেজিস্ট্রি করে অবৈধভাবা দাতা সদস্য মনোনীত হন। এছাড়াও ততকালিন ক্ষমতাসিনদের ছত্রছায়ায় শিক্ষকদের সাথে অসদাচারণ,বেতন না দিয়ে শিক্ষদের হয়রানি করাসহ শিক্ষক নিয়োগের নামে টাকা আত্মসাত করেন।
প্রতিষ্ঠানের সাবেক ম্যাজিং কমিটির সদস্য রফি উদ্দিন জানান, তার ভাগ্নে হবি থানার গাংদী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের চাকুরীর জন্য অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলামের নিকট চারজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেন। পরে দুই দফায় রফিউদ্দিন আরও ১ লাখ ৫ হাজার টাকা দেন। ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে চাকুরী দেননি। চাকরী না পেয়ে টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে তিনি আওয়ামীলীগের ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেন।
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মহিনুর রহমান, জহুরুল ইসলাম, ছানোয়ার হোসেন, আরমান আলী, জিন্নাত আলী, হেকিম আলী, শরিফুল ইসলাম, ইমাদুল হক, আবুল কাশেম অভিযোগ করে জানান অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম গত ১৬ বছর ধরে দলীয় ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে তার তেলবাজ অনুসারী শিক্ষকদের সাথে নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি করে প্রতিষ্ঠান চালাতেন। তিনি তৎকালিন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সেলুন জোয়ার্দ্দারের ভাই রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনকেও সভাপতি করেন । তাকে সাথে নিয়ে মেতে উঠেন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বাণিজ্যে। কয়েক বছরে নিয়োগ বাণিজ্য করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করে অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম। দীর্ঘ বছর ধরে প্রতিষ্ঠান থেকে কোন টাকা শিক্ষকদের দেননি, এমনকি শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে নেওয়া উপবৃত্তির টিউশন ফ্রির টাকাও আত্মসাৎ করেন তিনি।
শিক্ষকরা আরও জানান, বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বেতন বিনা কারণে বন্ধ করে রেখে হয়রানি করেন।
অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম তার দাড়ি ছিড়ে দেওয়াও হুমকি দেওয়া সহ প্রতিষ্ঠানের বেশকিছু শিক্ষককে মামলার ভয় দেখাতে থাকেন।
এসকল অভিযোগ তুলে শিক্ষকরা অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলামের অপসারন দাবী করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম বলেন, তার নামে শিক্ষকরা যে সকল অভিযোগ তুলেছেন তা সঠিক নয়। তিনি এসকল কাজের সাথে জড়িত নন।