হঠাৎ বাবা মারা যাওয়ার পর পুরো সংসারের ভার মাথায় এসে পড়ে বড় দুই বোন দিলরুবা ও আজমেরী জাহান মিশকোর ওপর। ভাই দুইটা ছোট হওয়ায় তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়। ভেঙ্গে পড়ে পরিবার। এ সময় একটু সুবিধা হয় দিলরুবা রাশজাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করেছে। মিশকো একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ফোর্থ ইয়ারের ছাত্রী।
দুই বোন শোককে শক্তিতে পরিনত করে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। অথৈই সমূদ্রে তলিয়ে যেতে থাকা পরিবারকে টেনে তোলার আপ্রান চেষ্টা করতে থাকেন। করোনার বন্ধে মিশকো বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতেই গোড়ে তোলেন দুই বোনের পরিচালনায় ‘সিস্টারস কিচেন’।
প্রথমদিকে, মেসেঞ্জারের সহযোগীতায় বন্ধু-বান্ধবী ও প্রতিবেশীদের মাঝে খাবারের অর্ডার পেতে থাকে দুই বোন। ছোট দুইটা ভাই প্রাপকের বাড়িতে বিদ্যূৎ গতিতে ডেলিভারী দিয়ে আসে। পরবর্তীতে এর সীমানা বাড়তে থাকে। চাহিদা বাড়তে থাকায় খুলতে হয় সিস্টারসকিচেনবিডি.কম নামের অনলাইন পেইজ।
সিস্টারস কিচেনে তৈরী হচ্ছে নাস্তা। তৈরী হচ্ছে ভারী খাবারের আইটেমও। মজার মজার পারিবারিক এসব রান্না আপনি চাইলেই আপনার দরজায় গিয়ে দিয়ে আসছে সিস্টারস কিচেন।
নাস্তার আইটেম পাবেন- চিকেন ফ্রাই, চিকেন টিকিয়া, চিকেন বল, চিকেন কাটলেট, চিকেন নাগেট, চিকেন অনথন, চিকেন ললিপপ, চিকেন পপকর্ণ, চিকেন রোল, ভেজিটেবল রোল, এগ নুডুলস রোল, ডোনাট, ফুলপিঠা, পেস্টিকেক ও অসাধারণ পিজ্জা।
ভারী খাবারের আইটেমে পাবেন- চিকেন বিরিয়ানী, বিফ বিরিয়ানী, বিফ তেহারী, ফ্রাইড রাইচ, চিকেন ফ্রাই, ভেজিটেবল কম্বোপ্যাক।
আপনি অর্ডার দিলে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা সময় নিয়ে চাহিদামত খাবারের প্যাক আপনার বাড়িতে পৌছে দিয়ে আসবে সিস্টারস কিচেন।
সিস্টারস কিচেনের দুই বোন দিলরুবা ও মিশকো কঠোর পরিশ্রম করে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নিয়েছেন। তারা রীতিমত ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। পরিবারে আশার আলো জাগিয়ে তুলেছেন। কোন ছন্দপতন ছাড়াই ছোট ভাই দুইটারও লেখাপড়ার অবারিত সুযোগ তেরী হয়েছে।
দিলরুবা বললেন, সিস্টারস কিচেন এখন আর ছোট নেই। এর পরিসর অনেক বেড়েছে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ রাস্তার কোন খাবার তাদের সন্তানদের খেতে দিতে চান না। তাই পারিবারিকভাবে তৈরী সিস্টারস কিচেনের সুস্বাদু খাবার মানুষ পছন্দ করছেন।
আমাদের আজকের নারী উদ্যেক্তা দুই বোন দিলরুবা ও আজমেরী জাহান মিশকো। থানাপাড়া, আলমডাঙ্গা। মোবাইল- ০১৭৩০-৩৭৬৮১১।
(আলমডাঙ্গায় আপনাদের আশপাশে কোন নারী উদ্যেক্তা থাকলে আমাদের ০১৭১১-২৭৩৬০৯ এই নাম্বারে জানান। ‘মেহেরপুর প্রতিদিন’ সেই নারী উদ্যেক্তার গল্প আপনাদের শোনাবে)