আলমডাঙ্গা উপজেলার বুক দিয়ে বয়ে যাওয়া ভাটুই নদী নাব্যতা হারিয়ে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। মরা নদীতে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন স্থানীয় কৃষকেরা । কয়েক যুগ নদীর নাব্যতা রক্ষার্থে খননের কোন উদ্যোগ নেয়নি কতৃপক্ষ। বর্ষা মৌসুমে ভেসে আসা পলি-মাটি নদীর তলদেশে পড়ে এখন সমতল ভুমিতে রুপ নিয়েছে। খরস্রোতা নদীটি পুনঃখনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে দিতে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপের দাবী স্থানীয়দের।
এলাকাবাসি জানান, খরস্রোতা ভাটুই নদী খননের অভাবে অস্থিত্ব হারিয়ে অনেক আগেই কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। শত শত হেক্টর জমিতে রোপন করা হয়েছে বোরো ধান। এ নদীতে অবৈধ দখলের কবলে পড়ে পানির স্রোত ধারা বিঘ্নিত হচ্ছে। মূলত বর্ষা মৌসুমে এক-দুই মাস পানি থাকে। আবার নদীটি তার আপন সত্তা হারিয়ে শুকিয়ে যায়। অথচ ওই নদীতে চৈত্র-বৈশাখেও ছিল পানি। ছিল দেশীয় প্রজাতির মাছের সম্ভার। এখন নদীতে পানিও নেই, মাছও নেই। দেখা দিয়েছে দেশীয় মাছের আকাল। ফলে নদীকেন্দ্রিক মানুষগুলো বেকার হয়ে পড়েছে। নদী শুধু বর্ষাকালে কয়েক দিনের জন্য ফুটে ওঠে। এখন নদীর তলায় চাষাবাদ হচ্ছে ধান, ভুট্রাসহ নানান ফসল।
সরেজমিনে নদী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভাটুই নদীর বুকে শত শত ভূমিহীন কৃষক বিশেষ করে বোরো ধানসহ নানা ফসল চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জাহাপুর গ্রামের আমজেদ আলি বলেন, নদীতে পানি শুকিয়ে সমতল ভুমিতে পরিণত হয়েছে। নদী এখন ফসলি জমিতে রুপ নিয়েছে। কোথাও হাটু জল, কোথাও জলবিহীন গর্ত। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় হয়েতো নদীর প্রাণ হারিয়ে মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। তাই নদীর অস্তিত্ব সংকট কাটিয়ে খনন ও সংস্কার করা জরুরী।
ঘোলদাড়ি কুঁটিপাইকপাড়া গ্রামের ভূমিহীন কৃষক বদরুদ্দিন বলেন, আমাদের তেমন জমিজমা নেই, তাই বোরো মৌসুমে নদী শুকিয়ে গেলে চাষাবাদ করি।
চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ জানান,- ভাটুই নদী পূর্ণখননের জন্য মন্ত্রণালয়ে কাগজ পাঠানো হয়েছে। আবেদনের প্রেক্ষিতে বরাদ্দ হলেই খনন কাজ শুরু করা হবে। তিনি আরো বলেন,- নদীর বুকে ফসলের চাষাবাদ ও ভরাটের বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার হোসেন শহীদ সরোয়াদ্দী বলেন, শুকিয়ে যাওয়া নদীতে ভূমিহীন কৃষকরা বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করে কিছুটা আর্থিক সচ্ছল হচ্ছেন।