‘ভেজালের ভিড়ে খাঁটির খোঁজে’ এমনই উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন আলমডাঙ্গার চিৎলা গ্রামের পাপিয়া সুলতানা মুন্নি, পরিবারের বড় সন্তান সে। উচ্চমাধ্যমিকের পর বিয়ে হয়ে যায় তার। স্বামী ও এক সন্তান নিয়ে তার চলছিল সুখের সংসার ।
কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েন মুন্নির স্বামী। সংসারের টানাপোড়োন ও বাচ্চা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি।
এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজে কিছু একটা করবেন। তিনি ফেসবুক ঘাটতে ঘাটতে একদিন নিজে দাঁড়িয়ে যাবার একটা পথ খুঁজে পান। দেখা মেলে ই-কমার্স পেজের সাথে। এই পেজই তার ভাগ্য বদলে দেয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ‘খাঁটির খোঁজে’ নামক ফেসবুক পেইজ দিয়ে শুরু হয় মুন্নির উদ্যোক্তা জীবন। তিনি প্রথমে সম্বল হিসেবে নেন গ্রামের বাড়ির একটি যাতা। যাতায় ভাঙ্গাতে থাকেন মাসকলাইয়ের ডাল। চাল কুমড়া ও মাসকলাইয়ের ডালের মিশ্রণে তৈরী করতে থাকেন খাটি কুমড়া বড়ি। দেদারছে বিক্রি হতে থাকে খাটি এই বড়ি।
এরপর তিনি আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে বিক্রি শুরু করেন সব রকমের কৃষি পণ্য যেমন-গমের লাল আটা, যাতায় ভাঙ্গানো মসুর ডাল, ঢেঁকি ছাটা চাউলের গুড়া, মসুর ও মাসকলাইয়ের ডাল। এছাড়াও তিনি এক সময়ের গ্রামীণ জনপদের ঐতিহ্যবাহী খাবার গুড়ের মুড়কি বানিয়েও বিভিন্ন এলাকাতে সরবরাহ করছেন।
মুন্নির ব্যবসা এখন অনেক প্রসারিত। দেশের বিভিন্ন জেলাতে অনলাইনে তার পণ্য সরবরাহ চলছে। ৯০০ টাকার পুঁজির মুন্নি এখন নিজেই লাখপতি।
মুন্নি বলেন, “আমি গ্রামের মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম মা-চাচিরা যাতায় ভেঙে নানা রকমের খাদ্যদ্রব্য বানিয়ে খেতেন। আমার ব্যবসা যখন শুরু করি, তখন থেকেই ভাবতাম ক্রেতাদের কাছে কিভাবে খাঁটি পণ্য পৌঁছে দেবো।
মূলত এজন্যই সিদ্ধান্ত নিই চুয়াডাঙ্গা জেলার উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিয়ে কাজ করার। শুরুটা ছিল কুমড়ার বড়ি ও গমের লাল আটা হোমডেলিভেরির মাধ্যমে।