আলমডাঙ্গায় আশকারা ফাউন্ডেশন নামের এক ভুয়া এনজিও গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছে।
বড় ধরনের ঋণ দেবার প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার গ্রামে গ্রামে সমিতি গঠন করে একেক সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয় অফিসে তালা লাগিয়ে রাতের আ পালিয়ে গেছে।
গত দুদিন ধরে প্রতারণার শিকার বিভিন্ন গ্রামের কয়েশ’ গ্রাহক অফিস ও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় ওইসব গ্রাহক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে,আলমডাঙ্গার রেলস্টেশন রোড (দক্ষিণ) এলাকায় ফুড গোডাউনের সামনে সড়কে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেরানি সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি এনজিওর অফিস করার কথা বলে ৪টি রুম ভাড়া নেয়।
ওই ঘরের সামনে আশকারা ফাউন্ডেশন নামের একটি ছোট সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে সেখানে এনজিওর কার্যক্রম শুরু করে। মিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি আশকারা ফাউন্ডেশনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে কয়েক সদস্যের মাধ্যমে উপজেলার গ্রামে গ্রামে সমিতি গঠন করে।
তারা ওই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে চাকরীর বিজ্ঞাপন সম্বলিত হ্যান্ডবিল দেওয়ালে লাগাই। চাকরি পাওয়ার প্রলোভনে পড়ে বেকার যুবকরা তাদের টাকা প্রদান করে। এদিকে সমিতির সদস্যদের ৫০ হাজার জমা করলে ৫ লাখ টাকা,১লাখ টাকা জমা করলে ১০ লাখ টাকা লোন দেবার প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ শুরু করে। ভুয়া ওই এনজিওর কর্মকর্তাদের প্রলোভনে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মহিলা পুরুষ লাখ লাখ টাকা তাদের কাছে জমা দেয়।
টাকা প্রদান করাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কালিদাসপুর ইউনিয়নের পারকুলা গ্রামের লাল মোহাম্মদের ছেলে আসিফ ইকবাল ৩০ হাজার,পাঁচলিয়া গ্রামের শফি উদ্দিনের ছেলে স্বপন আলী ৫২ হাজার,একই গ্রামের মৃত আজব আলীর ছেলে উজ্জল ১০ হাজার,কালিদাসপুর ইউনিয়ন পাইকপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে হারুন ১৫ হাজার,জামজামি ইউনিয়নের ভোদুয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের স্ত্রী ফজিলা খাতুন ১০ হাজার,একই গ্রামের ওহিদ আলীর স্ত্রী শরিফা খাতুন ১০ হাজার,কুমারী ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের ইদবার আলীর ছেলে মোহাম্সদ আলী লোনের ২০ হাজার ও চাকরীর জন্য ২০ হাজার টাকা,কামালপুর গ্রামের মোশারেফ হোসেনের ছেলে আব্দুস সামাদের কাছ থেকে ২০ হাজার,একই গ্রামের মৃত নবীছদ্দিনের ছেলে আজগর আলীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা,পাঁচলিয়া গ্রামের নওয়াজ আলীর ছেলে সোহেলের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা,হারদী গ্রামের মীর ইসমাইলের ছেলে মীর ইয়াসিন আলীর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশ গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়।
গ্রাহক পাঁচলিয়া গ্রামের শফিউদ্দিনের ছেলে স্বপন জানান,আমাদের ১০/১২ জন মিলে দেড় লাখ টাকা নিয়ে সোমবার লোন দেবে বলে জানায় । কদিন তারা ঘন ঘন মোবাইল করলেও আজ দুই দিন বন্ধ। অফিসে এসে দেখি অফিস তালা লাগিয়ে তারা পালিয়েছে। তাদের মোবাইলও বন্ধ। তারা বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছে।
একই কথা জানিয়েছেন,ভোদুয়া গ্রামের ফজিলা খাতুন। তিনি জানান, ৬ টাকা হারে সুদে লোন দেবে বলেই তারা বেশ কয়েকজন মিলে সমিতি খুলে লোনের আশায় টাকা দিয়ে এখন বিপদে পড়েছে। এমন প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন গ্রাহক সোমবার আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।