আলমডাঙ্গায় বলিয়ারপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে।
বলিয়ারপুর গ্রামের বাহাদুর মেম্বর ও নাগদাহ গ্রামের সরোয়ার মেস্বর উত্তোলনকৃত বালি বিক্রয় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে । উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোন পদক্ষেপ।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের বলিয়ারপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮টি ঘর নির্মাণের পদক্ষেপ নেয় জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন।
যাদের জমি ও বসতবাড়ি নাই তাদের বসবাসের জন্য মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাড়ি নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
বলিয়ারপুর বাজার প্রাঙ্গণে প্রায় ১০ কাঠা জমিতে ৮ টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে সরকারি খাস জমি নির্ধারণ করে। ওই জমি নিয়ে নাগদাহ গ্রামের দখলকৃত মালিকের সাথে আইনে জড়াই প্রশাসন। বর্তমানে জমিতে অস্থায়ী ঘর নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা ও ১৪৪ ধারা জারি করেছে জুডিশিয়াল আমলি আদালত। এরই কারণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ মুখ থুবড়ে পড়েছে।
এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য ১শত ২০ গাড়ি বালির প্রয়োজন। ঘর নির্মাণের জন্য বলিয়ারপুর গ্রামের মধ্যবর্ত্তী মাঠের মধ্যে সদ্য খননকৃত পুকুরের ২০ থেকে ৩০ ফিট গভীর থেকে সরকারি নির্দেশনা ও আইনলঙ্ঘন করে প্রায় ৫শত গাড়ি বালি উত্তোলন করা হয়।
উত্তোলনকৃত বালি খুচরা বাজারে ৫ শত টাকা দরে বিক্রয় করছে। যার মূল্য প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বালি উত্তোলন ব্যয় হিসেবে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা খরচ হয়, সেখানে প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।
এতে সরকার ব্যাপকভাবে রাজস্ব হারাচ্ছে, ক্ষতির হুমকিতে আছে আবাদি ফসলের প্রায় শতাধিক জমি। বোরো মৌসুমে আবাদি জমিতে পানি থাকবে না বলে জানায় স্থানীয় মাঠ পর্যায়ের সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা।
নাম না প্রকাশে অনেক কৃষক জানান, আবাদি জমির পাশেই গভীর থেকে বালি উত্তোলন করেছে বাহাদুর ও সরোয়ার মেম্বর। এরই কারণে শুকনো মৌসুমে আবাদি জমিতে পানি স¦ল্পতা দেখা দেবে।
আরো জানায়, ইতিপূর্বে সাবেক আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত মান্নান গভীর থেকে বালি উত্তোলনের ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজসের অভিযোগের কারণে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে জেলা প্রশাসন।
এরই কারণে আলমডাঙ্গা উপজেলায় পুকুরের গভীর থেকে বালি উত্তোলন সম্পূর্ণ বন্ধ করে। এতে থমকে পড়ে এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের রাস্তা,কালভার্ট ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন মূলক কাজ।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ সালের ৬২ নং ধারায় বলা হয় বিপনণের জন্য কোন উন্মুক্ত স্থান, চা বাগানের ছড়া কিংবা নদীর তলদেশ হইতে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না।
এছাড়াও, পরিবেশ আইন ১৯৯৫ সালের ১ নং ধারার অধীনে পরিবেশগত ভাবে সংকটাপন্ন হলে উত্তোলনকৃত পাম্প ও বালি মাটি উত্তোলন করা যাবে না। যদি আইন লঙ্ঘন করে, উত্তোলনকৃত মালামাল জব্দ করা হবে।
এই ব্যাপারে আলমডাঙ্গা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ন কবির বলেন, কেউ লিখিত ভাবে আমাদের নিকট অভিযোগ করলে তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।