চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে গ্রাম্য চিকিৎসক তৌহিদুল ইসলামকে হত্যা মামলার মূলরহস্য উদঘাটন সহ ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানাধীন ডম্বলপুর-মাধবপুরে সংযোগ ব্রিজের উত্তর-পূর্ব পিলারের সাথে সাদা গেঞ্জি দিয়ে মুখ বাঁধা, গলায় লাল রঙের গামছা পেঁচানো, গলায় রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় কুমার নদীতে অর্ধডুবন্ত অবস্থায় লাশের সংবাদ পেয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় গ্রাম্য চিকিৎসক চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা থানার ডম্বলপুর গ্রামের মোঃ মকবুল হোসেনর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম(৪২) কে মৃত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ।
এ সংক্রান্তে আলমডাঙ্গা থানায় ভিকটিমের স্ত্রী মোছাঃ বিউটি খাতুন বাদী হয়ে আসামী ১) মোঃ জীবন হোসেন(২২), পিতা-মোঃ সানোয়ার হোসেন, ২) মোঃ সানোয়ার হোসেন(৫০), পিতা-মৃত খেলাফত মন্ডল, সাং-মাধবপুর, থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গাসহ অজ্ঞাতনামা ৬/৭জন আসামীর বিরুদ্ধে রবিবার আলমডাঙ্গা থানার মামলার নং-০৩ ধারা-৩০২/২০১/১১৪/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম)-এর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আনিসুজ্জামান -এর নেতৃত্বে আসামী গ্রেফতার ও হত্যা মামলার মূলরহস্য উদঘাটনের জন্য ডিবি ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একাধিক টিম তাৎক্ষণিকভাবে মাঠে নামে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলা রুজুর ০৩ ঘন্টার মধ্যে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে রবিবার দুপুর দেড়টার বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শুক্রবারের প্রথম প্রহরে এজাহারনামীয় আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করে।
আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম তৌহিদুল ইসলামের কন্যা তামান্না খাতুনের সাথে ১নং আসামী জীবনের গত দুই মাস পূর্বে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিবাহ হয়। এ সংক্রান্তে ভিকটিম আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। বিবাহের পর থেকে ভিকটিমের মেয়েকে আসামীরা বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। ভিকটিমের মেয়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আসামীর বাড়িতে বিষ পান করে। বর্ণিত বিষয়ে ভিকটিম ও আসামীদের সাথে ঝগড়া-বিবাদ হয়। ১নং আসামী জীবন ও ২নং আসামী সানোয়ারকে ভিকটিম ও তার পরিবার অপমান-অপদস্থ করে। অপমানের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে আসামীদ্বয়। আসামীদ্বয়ের (পিতা ও পুত্র) পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে কৌশলে মাধবপুর এলাকায় ডেকে নিয়ে যায়। ডম্বলপুর-মাধবপুর সংযোগ ব্রিজের নিকট পৌঁছালে ২নং আসামী সানোয়ার গতিরোধ করে এবং ১নং আসামী পিছন থেকে গলায় গামছা ও মুখের ভিতরে সাদা গেঞ্জি ঢুকায়ে শ্বাসরোধ করে। শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য ভিকটিমের গলায় রশি দিয়ে ব্রিজের রেলিংয়ের সাথে ঝুলিয়ে দেয়। আসামীদ্বয়কে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ১নং আসামী স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।