আলমডাঙ্গার আইলহাঁসের পদ্মবিলে তিন মামলার আসামী হাকিম নামের এক যুবককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (২৪ জুলাই) সকালে তার লাশ উদ্ধার
করে পুলিশ। এ ঘটনায় হাকিমের বন্ধু পিয়ার আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশী হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিহত আব্দুল হাকিম আইলহাঁস গ্রামের
সাহাবুদ্দিনের ছেলে। তার নামে হত্যা, অস্ত্র ও একটি অপহরন মামলা রয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর কবীর জানান, হাকিমের নামে অস্ত্রসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
পূর্ব শত্রতার জেরে হত্যা করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশ মাঠে নেমেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হাকিমের বয়োবৃদ্ধ নানি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে আইলহাঁস গ্রামের ফয়জুলের ছেলে পিয়ার পদ্মবিলে মাছ ধরতে হাকিমকে ডাকতে
আসে। সে তাদের বাড়ি থেকে মাছ ধরার যন্ত্র কোচও নিয়ে যায়। হাকিম পরে পদ্মবিলে যায়। প্রতিবেশীরা জানায়, রাত ১০ টার দিকে বাড়ির পাশের পদ্মবিল থেকে হাকিমের বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে তারা বিলের ধারে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করে। না পেয়ে তারা বাড়িতে ফিরে আসে। পরদিন শুক্রবার সকালে প্রতিবেশীরা বিলের কোমর পানিতে হাকিমের মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ জানায়, হাকিমের মাথায় ভারী কোন বস্ত দিয়ে প্রথমে আঘাত করা হয়। পরে এক থেকে
একাধিক ব্যক্তি তাকে পানিয়ে চুবিয়ে হত্যা করে বলে ধারনা করা হচ্ছে। জানা গেছে, একটি অস্ত্র মামলায় হাকিম গত বছরের শেষের দিকে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে
ঢাকায় চলে যায়। তার বাবা-মা‘ও ঢাকার একটি গার্মেন্টে কাজ করেন। করোনা শুরুর দিকে হাকিম ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে এসে একা একা বসবাস
শুরু করে। সূত্র জানায়, কিশোর বয়স থেকেই ডানপিটে স্বভাবের ছিল হাকিম। ২০১৫ সালে পাশ্ববর্তী রায়লক্ষিপুর গ্রামের আব্দুল গাফ্ধসঢ়;ফারের ছেলে হ্যাবাকে নিয়ে হাকিম একবার নিখোঁজ হয়। সপ্তাহখানেক পরে সে বাড়িতে ফিরে এলেও হ্যাবা আজও ফিরে আসেনি। নিখোঁজের ঘটনাটি
হাকিমের নাটক ছিল বলে সবাই ধারনা করে। হ্যাাবার পিতা এ ঘটনায় হাকিমের নামে একটি অপহরন মামলা দায়ের করে। ১৮ সালে আইলহাঁস গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে
মুদি দোকানী হাসিবুলকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ মামলাও হাকিমকে অভিযুক্ত করা হয়। গত বছরের শেষের দিকে আইলহাঁস গ্রাম থেকে হাকিমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাকে নিয়ে
অভিযানে গিয়ে একটি অস্ত্রও উদ্ধার করে পুলিশ। সেই অস্ত্র মামলায় হাকিমকে জেলে যেতে হয়। গত বছরের শেষের দিকে হাকিম সেই মামলায় জামিনে বের হয়ে ঢাকায় চলে যায়। পরে করোনা শুরু হলে সে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরে আসে। তবে স্থানীয়রা জানায়, হাকিম বাড়িতে ফিরে এলেও সে একটি রাতের জন্যও নিজের বাড়িতে ঘুমাতো না।