নিম্ন তাপমাত্রার পাশাপাশি তিব্র শীতে সাধারণ মানুষ ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না।
শীত নিবারণের জন্য গরম পোশাকের সঙ্গে বেছে নিচ্ছে খড়কুটোর আগুন। এরই মধ্যে আলমডাঙ্গায় নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরা ডাইরিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি,কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
ঘন কুয়াশার কারনে বৌরো আবাদের বীজ তলার চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পান, আলু, গম সহ বিভিন্ন ফসল কুয়াশার কারণের পোকা-মাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষ গরম পোশাক কিনতে ফুটপাতসহ বিভিন্ন দোকানে ভিড় জমাচ্ছে।
এদিকে তিব্র শীতের প্রভাবে আলমডাঙ্গার ৫০ শয্যা হারদি হাসপাতালে রোগের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। নারী-পুরুষ ডাইরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুরা নিউমোনিয়া ও সর্দি জ্বরসহ শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে আলমডাঙ্গার ৫০ শয্যা হারদি হাসপাতালে নারী-পুরুষ ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১ শ জন ভর্তি হয়েছে। এ রোগে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে ৭০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন ৫/৭ জন শিশু শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হারদি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
অন্য দিকে, আলমডাঙ্গায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আগুন পোহানোর সময় তাহারন নেসা (৭০) নামে এক বৃদ্ধা দগ্ধ হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃদ্ধার শরীর ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে আলমডাঙ্গা উপেজলার পুটিমারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ তাহারন নেসা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রোয়াকুলি গ্রামের মৃত ঝড়ু মিস্ত্রীর স্ত্রী।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মারভিন অনিক চৌধুরী বলেন, বৃদ্ধার শরীরের ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলা ও আলুক্ষেত রক্ষায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেওয়া, সম্ভব হলে চারা রাতের বেলা ঢেকে দেওয়া, বীজতলায় সেচ দিয়ে পরদিন সকালে পানি বের করে দেওয়া এবং বীজতলা লাল হলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলুক্ষেতে আগামধসা ও নাবিধসা ছত্রাক যাতে না লাগে, সে জন্য ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে বলা হয়েছে। এ জন্য মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
হারদি ৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজনিন সুলতানা কণা বলেন, শীতের প্রকোপ বাড়ায় হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। বিভিন্ন সময় মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকরা।
১২ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শনিবার পর্যন্ত ভর্তি আছেন ২৬ জন। এর মধ্যে ১২ জনই শিশু। এছাড়াও নারী-পুরুষ ৪৫ জন ভর্তি আছে।