আলমডাঙ্গার কেশবপুর গ্রামে একটি বাল্য বিয়েকে কেন্দ্র করে গ্রামটিতে রীতিমত হৈচৈ পড়েছে। বাল্য বিয়ে ঢাকতে গ্রামের একটি দলিতের (মুচির) বাড়িতে গিয়ে বিয়ে পড়ানোর কারণে বিয়ের কাজিকে মাওলানা ডেকে তওবা পড়ানো হয়। আবার নতুন করে একই পাত্র-পাত্রীর বিয়ের আয়োজনও করা হয়।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার কশেবপুর গ্রামের হানেফ আলীর অষ্টম শ্রেণিতে পড়য়া ছেলের সাথে একই গ্রামের বছির আলীর ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে বৃষ্টি খাতুনের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়। কিন্ত দুই পরিবারের অভিভাবকরা বাল্য বিয়ে হওয়ায় বিয়ে দিতে ভয় পেতে থাকেন। এই দুই অভিভাবকের ভয় কাটাতে এগিয়ে আসেন গ্রামেরই দুই কথিত মাতবর সেলিম ও মুঞ্জিল। তারা অভিভাবকদের অভয় দেন।
দুইপক্ষ গ্রামের কথিত দুই মাতবরের অভয় পেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা গোপন করতে ৪ নভেম্বর রাতে গ্রামের অশ্বিন মুচির বাড়িতে বিয়ের এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিয়ে পড়াতে ডাকা হয় গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানকে। এরপর যথারীতি দুই নাবালক-নাবালিকার মধ্যে বিয়ে হয়ে যায়।
এরপর রাত পেরিয়ে সকাল হতেই এক কান দুই কান করতে করতে মুচির বাড়িতে বিয়ে পড়ানোর ঘটনা গ্রামভর জানাজানি হয়ে যায়। এতে গ্রামবাসির মধ্যে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমালোচনার ঝড় থামাতে আবারও দৃশ্যপটে হাজির হন কথিত সেই দুই মাতবর সেলিম ও মুঞ্জিল। তারা অন্য মাওলানার কাছে এর মাশালা চান। মাওলানা মসজিদের ইমামকে তওবা পড়ানোর মাশালা দেন।
এরপর এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মাওলানা ডেকে বিয়ে পড়ানো মসিজদের ইমাম আব্দুর রহমানকে তওবা পড়ানো হয়। এভাবেই ওই বাল্য বিয়েকে জায়েজ করার যাবতিয় কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করা হয়।
কিন্তু গ্রামের কিছু লোক এতেও ঘোর আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, অবৈধ এইসব বিয়ে পড়ানো বন্ধ করা উচিৎ। তারা অনুষ্ঠিত এই ধরনের একাধিক বাল্য বিয়ের জন্য গ্রামের সেলিম ও মুঞ্জিলকে দায়ি করে বলেছেন, এই দুইজন গ্রামেও বাল্য বিয়েতে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। কখনও কখনও গ্রামের বাইরে থেকে এসেও এই দুইজনের শেল্টারে বিয়ে পড়িয়ে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কথিত মাতবর মুঞ্জিল বলেন, সে এইসবের ভেতরে জড়িত নন। গ্রামের মাতবররা অশ্বিন মুচির বাড়িতে বিয়ে পড়িয়েছে এবং কাজিকে মাওলানা ডেকে তওবা পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। গ্রামের মাতবর কে জানতে চাইলে তিনি জানান, সেলিমের সাথে কথা বলিয়ে দিবেন।