আলমডাঙ্গায় সুজা উদ্দীন নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা নিয়ে পরিবারসহ উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সে বিভিন্ন এনজিও ও ব্যবসায়ী এবং ব্যক্তির কাছ থকে ব্যবসা সূত্রে তিনি এই টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বাদি হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় অভিযোগ দিয়েছে।
সুজা উদ্দীন যশোর সদর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আছির আলীর ছেলে। সে বৈবাহিক সূত্রে উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের বাদেমাজু গ্রামের শশুর আব্দুল মান্নানের বাড়িতে বসবাস করত।
স্থানীয়রা জানান, গত ৭ বছর আগে সুজা উদ্দীন আলমডাঙ্গা পৌর শহরের মেডিসিন কর্ণারে চাকুরি করেন। ২০২০ সালে সে নিজেই রিপন ফার্মেসি নামের একটি দোকান শুরু করেন। ব্যবসায়ীক সম্পর্কে সে বিভিন্ন এনজিও, ব্যবসায়ী ও ব্যাক্তির নিকট থেকে ঋণ নেয়। এছাড়া বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির নিকট থেকে বাকিতে ঔষধ নেয়। এতে প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্নসাৎ করে রাতারাতি উধাও হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী ঔষধ কোম্পানি মার্কেটিং রিপ্রেজেন্টিভেরা জানায়, ইবনে সিনা ফার্মাসিটিক্যাল ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা, জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা, একমি ফার্মাসিটিক্যাল ১ লাখ টাকা, নাভানা ফার্মাসিটিক্যাল ১ লাখ ১০ হাজার টাকা , বিকন ফার্মা ৯০ হাজার টাকা, বায়ো ফার্মা ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা, নিপ্রো জেএমআইয়ের ৫০ হাজার টাকা, পপুলার ফার্মা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, এসকেএফ ফার্মা ১৫ হাজার টাকা, জিসকা ফার্মা ১৬ হাজার টাকা, প্যাসেফিক ফার্মা ১১ হাজার টাকা, এভারেস্ট ফার্মা ১৬ হাজার টাকা, ড্রাগ ফার্মা ১০ হাজার টাকা, এপেক্স ফার্মা ৪ হাজার টাকা। ব্রাক এনজিও থেকে ৭ লাখ ও একতা ডেইলি সমিতি থেকে ২৭ লাখ এবং ফোর স্টার সমিতি থেকে ৭ লাখ টাকা নেন।
এছাড়া প্রতিবেশী কসমেটিকস এন্ড কনফেশনারী ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামের কাছ থেকে ৪ লাখ, ভাই ভাই মোবাইলের মালিক জুয়েল রানার কাছ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার, আমেনা কনফেশনারীর মালিক ডাবলুর কাছ থেকে ৫০ হাজার ধার নেন। এছাড়াও গোপনে তিনি চড়া সুদে অনেক ব্যাক্তির কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছেন।
ইবনে সিনা ফার্মার এমআর আসাদুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ীক সূত্রে কোম্পানির প্রায় ৭ লাখ টাকা বাকি দেওয়া হয়েছে। গত (১৪ নভেম্বর) মঙ্গলবার রাতের আধারে তিনি পরিবার নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী কসমেটিকস এন্ড কনফেশনারী ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম জানান, গত ১ মাস পূর্বে দোকানে ঔষধ কেনার জন্য ৪ লাখ টাকা ধার নেয়। ব্যাংকে লোনের টাকা তুলে পরিশোধ করবে। তিনি রাতারাতি পরিবার নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
এবিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাদিউজ্জামান বলেন, কয়েকজন ঔষধ কোম্পানির এমআর বাদি হয়ে অভিযুক্ত সুজা উদ্দীনের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এবিষয়ে সত্যতা নিশ্চিতে খোঁজখবর চলছে।
আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, অর্থ আত্নসাৎ করে উধাও এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত চলছে, পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।