কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চুয়াডাঙ্গা জেলা চলছে লকডাউন। শুধুমাত্র চিকিৎসালয়, ফার্মেসী, কাঁচাবাজর, মুদিখানার দোকান বাদে সমস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। গত এক সপ্তাহ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ভ্যান, রিক্সা, ইজিবাইকসহ সবধরনের অবৈধ যানবাহন চলাচল।
ফলে চরম বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর, নিম্নমধ্যবিত্ত -মধ্যবিত্তসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। বেশি বিপাকে পড়েছে ডেইরি খামারিরা।
আলমডাঙ্গা বাজারের বাবু মিষ্টান্ন ভান্ডারের দুইটি ও অধিকারী মিষ্টান্ন ভান্ডার দুইটি মোট ৪টি মিষ্টির দোকান বাদে প্রায় অর্ধশত মিষ্টির দোকানসহ উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাজারে অবস্থিত শতাধিক মিষ্টির দোকান বন্ধ রয়েছে। যে কারণে কম দামে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে খামারিরা।
আলমডাঙ্গার কুমারীর গ্রামের খামারি রানা মন্ডল জানান, “করোনাভাইরাসের কারণে বড় কোনো প্রতিষ্ঠান দুধ নিচ্ছে না। মিষ্টির দোকান ও হোটেল গুলোও বন্ধ। অল্প দামেও দুধ বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না। এখানে দুধ সংরক্ষণ করে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে আমার খামারে দুধ না দুইয়ে বাছুরকে দিয়ে সবই খাওয়ানো হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে খামারিরা পথে বসে যাবেন বলে মন্তব্য করেন।
কলেজ পাড়ার খামারি জেহুন আলী সেন্টু বলেন, ‘আমার খামারে ৬টি গাভী রয়েছে। দুধ বিক্রি করতে পারলে প্রতিদিন সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা আসতো। কিন্তু এত দুধ কোথায় বিক্রি করব? মিষ্টির দোকান বন্ধ।”
অন্যদিকে, বিভিন্ন খামারের মালিকরা তাদের খামারের পশুদের জন্য খাবার কিনতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। বর্তমানে যানবাহন চলাচল না করাতে পশুখাদ্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে লোকশানের বোঝা মাথায় নিয়ে খামার বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবেনা বলে জানিয়েছেন আলমডাঙ্গার বিভিন্ন খামারের মালিকরা।
আলমডাঙ্গার কুমর নদ পাড়ের খামারি আব্দুল জব্বার লিপুর গরু মোটাতাজাকরণ খামার, ছাগল ও হাঁস-মুরগির খামারের বেহাল অবস্থা। তিনি বলেন, “প্রয়োজনীয় খাবার বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি পন বিচুলি আগে যেখানে নিত ১৩০ টাকা বর্তমানে তা হয়েছে ৩’শ ৫০ টাকা। তাও আবার সময় মতো পাওয়া যায়না। গরুর খামারে বছরে তিনবার গরু বিক্রি করা হয়ে থাকে। পহেলা বৈশাখ আর দুই ঈদে। এবারের পহেলা বৈশাখে একটিও গরু বিক্রি হয়নি। সামনে আসছে ঈদ। ঈদেও এবার কি হবে বলা মুসকিল।” খামার শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে খামারিদের সুদমুক্ত ঋণ ও আর্থিক প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন।