আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতরে কর্মরত (হিসাব রক্ষক) হাছিবুল আলম শিপনের বিরুদ্ধে যৌতুক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছে তারই স্ত্রী ফরিদা পারভিন। গত রবিবার সকালে ভুক্তভোগী ফরিদা খাতুন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই নারী হলেন দর্শনা থানার আনোয়ারপুর গ্রামের ফজলু হকের মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, গত ২০ বছর আগে দর্শনা থানার আনোয়ারপুর হঠাৎপাড়া এলাকার ফজলু হকের মেয়ে ফরিদা পারভিনের সঙ্গে আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া বাজারপাড়া এলাকার আবু তাহেরে ছেলে হাছিবুল আলম শিপনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে এক পূত্রসন্তান রয়েছে। তাদের ছেলেটি একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত রয়েছে।
ভুক্তভোগী ফরিদা পারভিন জানান, ইতোপূর্বে হাছিবুল আলম শিপন চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতরে হিসাব রক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। চাকুরির সুবাদে ওই এলাকায় বসবাস করা হয়। সে বিভিন্ন দুষ্ট প্রকৃতির লোকের সঙ্গে মিশে এক মেয়ের সাথে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময় যৌতুকের টাকা দাবি করে তাকে নির্যাতন করে।
নির্যাতন থেকে বাঁচতে পর্যায়ক্রমে বাবার বাড়ি থেকে তার স্বামীকে নগত ৭ লাখ টাকা এনে দেন স্ত্রী ফরিদা খাতুন। এছাড়াও বিয়ের সময় দেওয়া ৭ ভরি স্বর্ণের গহনা ও ৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র হাছিবুল আলম শিপন বিক্রয় করে দেয়।
এতে হাফেজিয়া মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়েন স্ত্রী ফরিদা পারভিন। এর পরও তার স্বামী হাছিবুল আলম শিপন , শ্বশুর আবু তাহের, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম নাহি, ননদ তানিয়া আক্তার তনু ও তার স্বামী (ননদাই) রাশেদ হাসান যৌতুকের জন্য তাকে আরও বেশি মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
গত ২০ আগস্ট সকালে ফের এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। তাদের নির্যাতন ও অত্যাচার সইতে না পেরে, তার বাবার বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য হয় ফরিদা পারভিন। পরে তার বাবা ফজলু রহমান স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন ফরিদা পারভিনকে।
বিচারের দাবিতে, ফরিদা পারভিন বাদি হয়ে রবিবার সকালে আলমডাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
নির্যাতনের শিকার ফরিদার বাবা ফজলু রহমান জানান, বিভিন্ন সময় যৌতুক নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি মেয়ের জামাই হাছিবুল আলম শিপন। সরকারি চাকুরির অজুহাতে অন্য মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্কে আমার মেয়ের উপর নির্মম নির্যাতন ও যৌতুক দাবি করে। বিচারের দাবিতে মেয়ে বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ করেছে। এখন আমার মেয়ে তার ছেলেকে নিয়ে কোথায় দাঁড়াবে।
সত্যতা স্বীকার করে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাসুম আহমেদ বলেন, অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগে গত প্রায় ৩ মাস পূর্বে জীবননগর থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিপনের স্ত্রী আমাদের নিকট লিখিত অভিযোগ করলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতরে কর্মরত (হিসাব রক্ষক) হাছিবুল আলম শিপন জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যে। পরকীয়ার বিষয়ে তার নিকট জানতে চাইলে ফোন কেটে দেয়। একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।