আলমডাঙ্গায় আবারো ভুল চিকিৎসায় দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার রাতে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার শেফা ক্লিনিকে মারা গেছে। এ নিয়ে আলমডাঙ্গায় একই সপ্তাহের মধ্যে পৃথক ক্লিনিকে সদ্য ভুমিষ্ট শিশু ও দিনমজুরের মৃত্যু হয়। চিকিৎসা সেবা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া উঠেছে। আলমডাঙ্গার ক্লিনিক গুলো চিকিৎসা সেবার নামে মৃত্যুর আজরাইল হিসাবে ব্যবসা করছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হলেও অর্থের বিনিময়ে আপোশ মিমাংস করে ক্লিনিক কতৃপক্ষ। আইনও চোঁখ বন্ধ করে ক্লিনিক গুলোর কোন খোঁজ রাখে না।
জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের বেলগাছি বোর্ড পাড়ার মৃত উকিলের ছেলে দিনমজুর শুকুর আলি ।গত দেড় মাস পূর্বে শুকুর আলির পেটে ব্যাথা অনুভূত হয়।
পরিবারের লোকজনের সাথে আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার কলেজ পাড়ার শেফা ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য আসে। ক্লিনিকে ডা: ইমরান আল্ট্রাসনো করতে বলে। রিপোর্টে দিনমজুর শুকুর আলির পিত্বথলিতে পাথর হয়েছে বলে ডা. ইমরান পরিবারকে জানায় এবং দ্রুত অপারেশন করার জন্য চাপ দেয়। অপারেশন খরচ বাবদ ১৩ হাজার টাকায় তাদের চুক্তি হয়।
এরই এক পর্যায়ে শুকুর আলির পিত্বথলির পাথর নিধনে অপারেশন করে। অপারেশন করেন শেফা ক্লিনিকের মালিক ডা: তপনের ছেলে ডা: ইমরান। অপারেশনের সময় শুকুরের পেটের একটি নারী কেটে ফেলে। এরই কারণে দিনমজুর শুকুরের শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে থাকে। শুকুরের অপারেশনের পরও পেটের ব্যাথা আরো ত্রিব্য ধারণ করে। তাকে আবারো শেফা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ডা: ইমরান আবারো চেকআপ করেন। পূণরায় আবারো অপারেশন করতে হবে বলে জানায় শুকুরের স্ত্রী ফতে খাতুনকে।
দিনমজুর শুকুর এক মাত্র উপার্জিত ব্যাক্তি। তিনি দিন শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালায়। ইতো পূর্বে শুকুরের অপারেশন বাবদ ও ঔষধসহ প্রায় ২৫ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে।
আবারো অপারেশনের জন্য প্রায় ১০/১২ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায় ডা. ইমরান।স্বামীকে বাঁচাতে ফতে খাতুন তার নিকটতম আত্নীয়দের নিকট টাকা ধার ও বাড়িতে থাকা বিভিন্ন ছাগল, মুরগিসহ বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে । পূর্ণরায় অপারেশনে ভালো হবার জন্য।
ডাক্তার যদি হয় কসাই ,তাহলে কার ভাগ্যে কি লেখা থাকে সে নিজেও জানে না। আবারো শেফা ক্লিনিকে অপারেশন করে শুকুরকে। তবুও কোন আশার আলো না জ¦ালিয়ে অন্ধের পথে এগিয়ে যায় শুকুর। দিনের সাথে পাল্লা দিয়ে শারীরিক অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে।
পরে শেফা ক্লিনিকের নিজস্ব এ্যাম্বলেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করে। হাসপাতালের চিকিৎসক বাঁচবে না বলে রোগীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। গত বুধবার দিন রাতে শুকুর আলি নিজ বাড়িতে মারা যায়। শুকুর আলির ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী ফুঁসলে ওঠে। প
রবর্তীতে শেফা ক্লিনিকে মালিক ডা: তপন শুকুর আলির বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ২ লক্ষ টাকায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। শেফা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অসংখ্য ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ আছে। অভিযোগ থাকলেও অদৃশ্য ছায়ায় তা ধামাচাপা পড়ে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।