আলমডাঙ্গার লালব্রিজে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ করার সময় সিগনাল দেয়ার পরও মালবাহী ট্রেন না থামানোয় সহকারী চালককে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৫-৩০ জন শ্রমিক প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। আহত হয়েছে কয়েকজন শ্রমিক। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে ঘটেছে। সহকারি চালকের মারধরের বিচারের দাবিতে প্রায় ১০ ঘন্টা মালবাহী ট্রেন অবস্থান নেয় লালব্রিজের উপর। ট্রেন চালককে মারপিটের ঘটনায় বিভাগী কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শুরু হয় তদন্ত।
রেল সূত্রে জানাযায়, বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে দর্শনা বর্ডার হয়ে পাথর বোঝাই ট্রেন সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলো। এদিকে, সকাল থেকে আলমডাঙ্গা লালব্রিজের উপরে রেললাইন সংস্কারের কাজ করছিলো ২৫-৩০ জন রেল শ্রমিক। সংস্কারের জায়গা থেকে প্রায় ৪শ মিটার দুরে লাল ফ্লাগ তুলে রাখে রেল শ্রমিকেরা। দুপুর ১ টার দিকে ওই পাথর বোঝাই ট্রেন আলমডাঙ্গা স্টেশন ক্রস করলে লাল ফ্লাগ তুলে ট্রেনটিকে থামানোর চেস্টা করে। রেল শ্রমিকেরা ব্যর্থ হলে ট্রেনটি লালব্রিজের নিকট আরেকটি ফ্লাগ ভেঙে ব্রিজে প্রবেশ করে।
আতঙ্কে ব্রিজ থেকে শ্রমিকেরা লাফ দেয়।কেউ কেউ ব্রিজে ঝুলে পড়ে। শ্রমিকদের চিৎকারে ও সামনে রেললাইন সংস্কারের ট্রলি দেখে থেমে যায় মালবাহী ট্রেনটি। এসময় উত্তেজিত হয়ে ট্রেন চালক প্রধান আমিনুল ইসলাম ও সহকারি জোনায়েদ সিদ্দিককে মারপিট করে। এতে, চালক দুজন আহত হয়। খবর পেয়ে পাঁকশি বিভাগীয় প্রতিনিধি টিম আলমডাঙ্গা লালব্রিজের নিকট পৌছায়। শুরু হয় তদন্ত। এসময় উপস্থিত হয় পাঁকশি জোনের ডিআরএন, ডিএন ওয়ান, চুয়াডাঙ্গার এ.ই.এন ও এস.এস.ও.ই।
দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত কার্যক্রম চালায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। খুলনা থেকে ঢাকা মুখি রেললাইন বন্ধ থাকলেও বিপরীত মুখি লাইন দিয়ে যোগাযোগ সচল রাখে আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার।
আলমডাঙ্গার স্টেশন মাস্টার তৌহিদুল ইসলাম টোকন বলেন, ২৫-৩০ জন শ্রমিক লাইনে কাজ করছিল। এসময় লাল পতাকা দিয়ে সংকেত দিলেও মাল ট্রেনটি থামায়নি চালক। পরে লালব্রিজের উপর শ্রমিকরা প্রাণ বাচাতে যে যার মত ঝাপ দেয় নিচে। এতে আহত হয় কয়েকজন শ্রমিক। পরে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে ট্রেন চালককে মারধর করে। পরে চালক তার মারধরের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মালট্রেন থামিয়ে রাখে।
তিনি আরও বলেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়নি। ওই মালট্রেনবাহী ট্রেন ডাউন লাইনে রয়েছে। অপর লাইন থেকে ট্রেন চলাচল করছে। সন্ধার সাড়ে ৯ টায় ট্রেনটি সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, সংকেত দিলেও ট্রেন চালক থামেনি। চালক ঘুমাচ্ছিল। পরে প্রাণ রক্ষাতে ব্রিজের উপর থেকে লাফ দেয় শ্রমিকরা। বিস্তারিত জানতে ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছে।