চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় অসচ্ছল, হতদরিদ্র, গৃহহীন ৪৯টি পরিবারের পর আরও ৫৪টি পরিবার পাচ্ছেন প্রায় ৩ লাখ টাকার দুর্যোগ সহনীয় ঘর। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাবিটা/টিআর কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্ধের অর্থে মানবিক সহায়তা প্রকল্পে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসসূত্রে জানা যায়, ১২ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার টাকা ব্যয়ে পৌরসভাসহ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে ৪৯টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ‘জমি আছে, ঘর নেই’ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রত্যেকটি ঘর দুই শতক জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। এসব ঘরের বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫৩১টাকা করে। ইতোমধ্যে ঘরগুলি হস্তান্তর করা হইয়েছে।
দরিদ্র পরিবারগুলো এসব ঘর পেয়ে দারুণ খুশি। গ্রামে তাদের সামাজিক মর্যাদা বেড়েছে। সরকার তাদের পাকা ঘর দিয়েছে।
বেলগাছি গ্রামের বিশ্বনাথ কুমার পাল পেয়েছেন একটি দুর্যোগ সহনীয় ঘর। তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জানান, আমরা কোন দিন চিন্তা করি নি যে পাকা ঘরে শোবো। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার ঘর পাকা ঘর দিয়েছে। আমাদের চেয়ারম্যান মন্টু দয়া করে একটা ঘর আমাদের দিয়েছেন। আমরা খুবই খুশি হইছি।”
জানা গেছে, ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নে ৪টি, হারদী ইউনিয়নে ৪টি, কুমারী ইউনিয়নে ৩টি, বাড়াদী ইউনিয়নে ৩টি, গাংনী ইউনিয়নে ৩টি, খাদিমপুর ইউনিয়নে ৩টি, জেহালা ইউনিয়নে ৩টি, বেলগাছি ইউনিয়নে ৩টি, ডাউকী ইউনিয়নে ৩টি, জামজামি ইউনিয়নে ৩টি, নাগদাহ ইউনিয়নে ৩টি, খাসকররা ইউনিয়নে ৩টি, কালিদাসপুর ইউনিয়নে ৩টি, চিতলা ইউনিয়নে ৩টি, আইলহাঁস ইউনিয়নে ৪টি ও পৌরসভায় ১টিসহ মোট ৪৯টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এনামুল হক জানান, সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ঘরগুলো তৈরি করা হয়েছে। কোন ধরনের অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
এদিকে, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসসূত্রে আরও জানা গেছে, উপরোক্ত ৪৯টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর হস্তান্তরের পর আবার নতুন করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আরও ৫৪টি ঘর নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে।
২ লাখ ৯৯ হাজার ৮ শ ৬০টাকা ব্যয়ে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এই হিসেবে ৫৪টি ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৬ কোটি ১৯ লাখ ২ হাজার ৪শ ৪০টাকা।
নতুন করে উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নে ৪টি, হারদী ইউনিয়নে ৪টি, কুমারী ইউনিয়নে ৪টি, বাড়াদী ইউনিয়নে ৩টি, গাংনী ইউনিয়নে ৩টি, খাদিমপুর ইউনিয়নে ৩টি, জেহালা ইউনিয়নে ৩টি, বেলগাছি ইউনিয়নে ৩টি, ডাউকী ইউনিয়নে ৩টি, জামজামি ইউনিয়নে ৫টি, নাগদাহ ইউনিয়নে ৩টি, খাসকররা ইউনিয়নে ৪টি, কালিদাসপুর ইউনিয়নে ৩টি, চিতলা ইউনিয়নে ৪টি, আইলহাঁস ইউনিয়নে ৩টি ও পৌরসভায় ২টিসহ মোট ৫৪টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী জানান, আমাদের দেশ দুর্যোগ কবলিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অতীতের চে’ বর্তমানে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে বজ্রপাত। এ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলা করা সম্ভব হয় না হতদরিদ্রত জনগোষ্ঠীর। তাদের জন্যই সরকার এই দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে।
দরিদ্র জনগোষ্ঠির জীবনমানের উন্নয়ন, তাদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ, গ্রামীণ এলাকায় শহরের আবহ সৃষ্টি করতে এই প্রকল্প সহায়ক হবে। সর্বপরি সরকারের এসডিজি বাস্তবায়নের অংশ এটি।
মেপ্র/আরজেএম