বলিউড মানেই ঝলমলে দুনিয়া, তারকাখ্যাতি, আর অভিজাত জীবন। তবে এই গ্ল্যামারের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এমন অনেক কেলেঙ্কারি, যা অনেক তারকার অভিনয় জীবনের ইতি টেনে দেয়। বলিউডের তারকারা শুধু অভিনয় নয়, তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও সবসময় আলোচনায় থাকেন। তবে বিতর্ক এবং কেলেঙ্কারি অনেক সময় তাদের উজ্জ্বল ক্যারিয়ার ম্লান করে দেয়।
এসব ঘটনাগুলো শুধু তাদের জন্য নয়, বলিউড ইন্ডাস্ট্রির জন্যও একটি শিক্ষা। নীচে এমন কিছু কেলেঙ্কারি তুলে ধরা হলো, যা বলিউডের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে রয়েছ। যেসব বিতর্কে জড়িয়ে ক্যারিয়ারই ধ্বংস হয়েছে অনেক তারকার। কেউ কেউ এখনও ভুগছেন ক্যারিয়ারে।
শক্তি কাপুরের স্টিং অপারেশন
২০০৫ সালে ইন্ডিয়া টিভির একটি স্টিং অপারেশনে শক্তি কাপুরকে কাস্টিং কাউচে জড়িত অবস্থায় দেখানো হয়। ভিডিওতে তাকে একজন উঠতি অভিনেত্রীকে কাজের সুযোগের বদলে আপত্তিকর প্রস্তাব দিতে দেখা যায়। ঘটনাটি তার ক্যারিয়ারে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছিল এবং বলিউডে তার গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়।
মধুর ভান্ডারকরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
খ্যাতিমান পরিচালক মধুর ভান্ডারকরের বিরুদ্ধে উঠতি অভিনেত্রী প্রীতি জৈন ধর্ষণের অভিযোগ আনেন।
যদিও আদালতে প্রমাণিত হয়নি সেই অভিযোগ, তবে এই কেলেঙ্কারি তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে বিশাল ঝড় তোলে।
মনিকা বেদির কারাদণ্ড
অভিনেত্রী মনিকা বেদির ক্যারিয়ার ধ্বংসের পেছনে তার গ্যাংস্টার আবু সালেমের সঙ্গে সম্পর্ক বড় ভূমিকা পালন করে। তার জাল পাসপোর্টের মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাদণ্ড তার ক্যারিয়ারের ইতি ঘটায়।
সঞ্জয় দত্তের অস্ত্র মামলার কেলেঙ্কারি
১৯৯৩ সালের মুম্বাই বোমা বিস্ফোরণে বেআইনি অস্ত্র রাখার দায়ে সঞ্জয় দত্ত গ্রেপ্তার হন। যদিও তিনি তার ক্যারিয়ারে ফিরে এসেছেন, তবে এই কেলেঙ্কারি দীর্ঘদিন তার ইমেজ কলঙ্কিত করেছে।
আরো পড়ুন
সুদিন ফেরাতে যে ১০ সিনেমায় নজর হলিউডের
সুদিন ফেরাতে যে ১০ সিনেমায় নজর হলিউডের
বিবেক ওবেরয় ও সালমান খানের দ্বন্দ্ব
২০০৩ সালে অভিনেতা বিবেক ওবেরয় সালমান খানের বিরুদ্ধে একাধিক হুমকির অভিযোগ আনেন। এর ফলে বলিউডে সালমানের অনুগতরা বিবেককে একঘরে করে দেয়। এই দ্বন্দ্বের কারণে বিবেকের ক্যারিয়ার বড় ধাক্কা খায়। বলিউড থেকে ছিটকে যান এ অভিনেতা।
রাজ কুন্দ্রার পর্নোগ্রাফি কাণ্ড
২০২১ সালে শিল্পা শেঠির স্বামী রাজ কুন্দ্রাকে পর্নোগ্রাফি প্রোডাকশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। যদিও শিল্পার ক্যারিয়ারে তেমন প্রভাব পড়েনি, তবে রাজ কুন্দ্রার সঙ্গে তার নাম জড়ানোর কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় অভিনেত্রীকে। এখনও সেই মামলায় প্রায়ই শিরোনামে উঠে আসে শিল্পার নাম।
শাইনি আহুজার ধর্ষণের অভিযোগ
২০০৯ সালে অভিনেতা শাইনি আহুজার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন তার গৃহকর্মী। যদিও তিনি পরে জামিনে মুক্তি পান, তবে সেই ঘটনায় তার ক্যারিয়ার পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়।
মি-টু আন্দোলন ও নানা পাটেকর
মি-টু আন্দোলনের সময় অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত অভিনেতা নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। অভিযোগের পর নানা পাটেকরের ইমেজ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তিনি বেশ লম্বা সময়ের জন্য বলিউড থেকে দূরে সরে যান।
রিয়া চক্রবর্তী ও সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু
সুশান্ত সিং রাজপুতের আকস্মিক মৃত্যুর পর রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মাদক মামলায় নাম জড়ানো হয়। মিডিয়া ট্রায়াল এবং সমালোচনার মুখে তার ক্যারিয়ার প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। যদিও এখন বিভিন্ন শোয়ের মাধ্যমে প্রত্যাবর্তন করেছেন রিয়া। তবে বলিউডে তার জায়গা হারিয়েছেন। নতুন কোনো কাজে দেখা মিলছে না অভিনেত্রীর।
সূত্র: কালের কন্ঠ