দরজার কাছেই কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহার উৎসব। ঈদুল ফিতরের মতো পোশাকি ঈদ এটি নয়। তারপরও কোরবানি ঈদে এখন নিত্যনতুন পোশাকের বাহার নিয়ে আসে ফ্যাশন হাউজগুলো। এই ঈদে সাধারণত জমকালো পোশাক কমই কেনা হয়। তাছাড়া পোশাক উপহার হিসাবে দেওয়া-নেওয়াটাও কম হয়। কারণ এই ঈদের মাহাত্ম্য আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। তবুও পরিবারের সদস্যদের জন্য তো নতুন পোশাক কেনাই হয়।
সেই সুবাদে পশুর হাট বসার আগেই নতুন পোশাক কেনার পার্টটা চুকিয়ে নিন। তীব্র গরমে মূলত পোশাকের নকশাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নকশার সঙ্গে সাংস্কৃতিক ধর্মীয় আবহ, সময়, প্রকৃতি ও আন্তর্জাতিক ট্রেন্ডের ব্যবহার দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
পোশাকের বৈচিত্র্য কম নয়
এবারের ঈদ পোশাকে ফ্যাশন হাউজগুলো ব্যবহার করেছে সুতি, লিনেন, হাফ সিল্ক, মসলিন, বেক্সি কটনসহ বিভিন্ন ধরনের মানানসই আরামদায়ক কাপড়। পোশাকের মোটিফকে রাঙাতে মূল রং হিসেবে কমলা, অলিভ, নীল, সাদা, কালোর ব্যবহার বেশি দেখা গেছে। গরম হলেও লাল, হলুদ, অ্যাশ, মেরুন, সবুজ, অফ-হোয়াইট ও মাল্টিকালার কম্বিনেশনও দেখা গেছে। অনেক ফ্যাশন হাউজ সৌন্দর্য বাড়াতে স্ক্রিন-ব্লক-ডিজিটাল প্রিন্ট, হাতের কাজসহ নানা ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহার করেছে। বাহারি রঙে রাঙানো কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মেয়েদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপস, সিঙ্গেল কামিজ। এছাড়া নারীদের পোশাকে রয়েছে টিউনিক, শ্রাগ-টিউনিক, গাউন ও শ্রাগ। আর ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, শার্টসহ সব ধরনের পোশাকই এবারের ঈদের পাওয়া যাবে। ছেলেদের জন্য আরো রয়েছে সেমি-ফর্মাল ও স্মার্ট-ক্যাজুয়াল স্টাইল। ডিজিটাল প্রিন্টের কটন ও ভিসকোস পাঞ্জাবিসহ লং স্লিভ ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট এবং হেনলি টি-শার্ট
ফেব্রিকেও জোর পেয়েছে আরাম
ফ্যাশন হাউজগুলোতে ঈদ কালেকশন হিসেবে থাকছে থিম নির্ভর ডিজাইন। অরিয়েন্টাল রাগ থিমের দিকেই জোর অনেকের। ফেব্রিকে রয়েছে কটন, স্লাব কটন, লিনেন, হাফ সিল্ক, জর্জেট, সিকুয়েন্স, মসলিন, বলাকা সিল্ক, এন্ডি সিল্ক। অ্যাশ, লাইট ব্রাউন, মেরুন, সাদা, কালো, ক্রিম, মিন্ট, লাল, পিংক, সবুজ, নীল, লেমন গ্রিন, পিচ, সি গ্রিন রঙের মিশ্রণ ঘটেছে পোশাকগুলোতে। মসলিন ব্লেন্ড, ভিসকস ব্লেন্ড, নাইলন-কটন ব্লেন্ড, লেসি-স্ট্রাকচার, পলিস্টার-কটন ব্লেন্ড, রামি, কটন ও হেম্প ব্লেন্ড এবং কটন মোডাল ফেব্রিকে নেচার-ইন্সপায়ার্ড প্রিন্ট স্টোরি ও হাইটেক নিয়ন কালার দিয়ে ঈদ পোশাক সাজিয়েছে লা রিভ। এবারের কালেকশনে লেয়ার, আবায়া ও রেট্রো ডিজাইনের পোশাকগুলো প্রাধান্য পেয়েছে। যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, ড্রাই, কারচুপি ও কাটিং অ্যান্ড সুইংয়ের কাজ রাখা হয়েছে।
ম্যাচিং আয়োজন হোক
কোরবানি ঈদে ম্যাচিং পোশাক কেনার দিকেই পরিবারগুলোর ঝোঁক থাকে। মেয়েদের ঈদ পোশাকে থাকছে শাড়ি, থ্রি-পিস, সিঙ্গেল কামিজ, কুর্তি, টিউনিক, ওড়না, রেডি ব্লাউজ, ব্লাউজ পিস, আনস্টিচড থ্রি-পিস। ড্রপ ও পাফ স্লিভস, র্যাফল, রাউশিং, পিনটাক, প্যাচওয়ার্ক, কারচুপি ও এমব্রয়ডারির বৈচিত্র্য। অন্যদিকে ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, পায়জামা, কাতুয়া, শার্ট, টি-শার্ট, টুপি, উত্তরীয় পাওয়া যাবে। অনলাইনে এক্ষেত্রে বেশি প্রচারণা দেখা যাচ্ছে। অনেক অনলাইন শপ নানা ডিসকাউন্টের কথাও বলছে।
ফ্যাশনহাউজের আয়োজন
ঈদ উপলক্ষ্যে আকর্ষণীয় সব পোশাক নিয়ে এসেছে ফ্যাশনহাউজগুলো। স্ক্রিন প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, কারচুপি ও এমব্রয়ডারির কাজের আধিক্য রেখেছে তারা। এবারে ফ্যাশনহাউজগুলোর ঈদ আয়োজনের মোটিফে জিওমেট্রিক, ট্র্যাডিশনাল, ফ্লোরাল প্রিন্ট দেখা গেছে। পোশাকে ভাইব্র্যান্ট কালারে জোর দিয়েছে তারা। কটন, ভিসকস, শার্টিন, নেট, ডেনিম ও টুইল ফেব্রিক্স, জ্যাকার্ড কটন, ডবি কটন, জর্জেট, সিল্ক দেওয়ায় ভাইব্র্যান্ট হওয়ার পরও এই পোশাকগুলো আরামদায়ক হয়েছে। ডিজাইন ও প্যাটার্নের ভিন্নতা অনুযায়ী পোশাকের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র: ইত্তেফাক