নিঃসঙ্গ বট ছায়া বিছিয়েছে, সেকালের কাব্য শোনাবে
আমিও তার মতো আত্মীয়হীন, বিজনে উত্তরের পথে
অচেনা গাড়িয়াল, একটি গরুর গাড়িও চোখে পড়ে না,
তৃষ্ণাকাতর চোখ দেখে অজস্র গরুর পাল টানে গাড়ি –
সারিসারি উত্তর-বাংলার পথে, মাটি ও পথ জেগে ওঠে
লোকায়ত সুরে, অচেনা গাড়িয়াল ক্রমশ দূরে হারায় –
ধূলিময় আবেদনে লোকায়ত সুর পেছনে রেখে যায়।
পথের মোচড় নেই মাটির গন্ধ নেই, গরুর কাহন নেই।
মহাকাব্যের বৃথা চাষ করে যায় এ অন্তর বিরানভূমিতে
কালের ধুলায় হেঁটে গেছে পদাতিক, রেখেছে পদচিহ্ন –
নদীও স্রোতের সকল আলাপচারিতা স্বপ্নে রেখে গেছে।
এ মন আষাঢ় শ্রাবণ, এ মন শ্রাবণে প্লাবন হলে মাছের
খলবল ধ্বনির জন্য কান পেতে থাকে একা মধ্যরাতে।
বহুতল ভবনের সিঁড়িকোঠা বলে অতিকায় দস্যুর কথা
প্রান্তর গুটিয়ে গেছে বনেদী কার্পেটে, ভূমি তুচ্ছ, সবাই
হাঁটে ফসলের কথা ভুলে, আবাদের কোন কথা নাই -।
দুপুরে সুকান্তের দুই লাইন পড়ে বিদ্রোহী হয়েছিল মন
অন্ধকারে সুকান্ত শূন্যগর্ভ হয়ে যায়, তা তাপিত স্খলন।
বটের ছায়াতলে কী ভুলে একতারা ফেলে গেছে বাউল
কুয়াশাবিহীন আশ্বিন আসে শূন্য পাত্র হাতে – বৈরাগ্য
সোনাঝরা রোদ ঢালে না, প্রিয় পড়শির পাতে ওঠে না
চিক্কন সোনামুগ ডাল আর ঝাঁকের কইয়ের উষ্ণ ঝোল।
পথের মোচড় নেই, মাটির গন্ধ নেই, নেই অন্য কাহন ।
তবু উত্তর-বাংলার পথে শুধু সন্তাপ রেখে যায় একজন।