বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বের উদ্বিঘ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই, বরং উৎসবের মেজাজে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের নির্বাচন সরেজমিনে দেখে যাওয়ার জন্য দেশগুলোকে পর্যবেক্ষক পাঠানোরও অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দিল্লিতে এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে এই দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত বা শীর্ষ কূটনীতিবিদদের নির্বাচনী পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন বাংলাদশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সেখানে এমন কথাই আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের প্রায় ৯০টি রাষ্ট্রকে জানিয়েছে বাংলাদেশ।
৯০টি দেশ হলো এমন দেশ, যাদের বাংলাদেশে সরাসরি কোনও দূতাবাস বা মিশন নেই, কিন্তু দিল্লিতে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতরাই বাংলাদেশ সংক্রান্ত ঘটনাবলি দেখে থাকেন। আর এরকমই প্রায় ৯০টি দেশের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত সেই ব্রিফিংয়ে।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে আমেরিকা বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে ধরনের ‘অতি-সক্রিয়তা’ দেখাচ্ছে, সেই পটভূমিতে এই ব্রিফিং ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ! বাংলাদেশে বিগত দেড় দশক ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে আর্থসামাজিক উন্নয়নের কর্মকাণ্ড চলছে এবং গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের পরম্পরা বহমান আছে, তাতে দেশের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের বা বিচলিত হওয়ার কোনও কারণ নেই– মূলত এই বক্তব্যই ব্রিফিংয়ে তুলে ধরা হয়।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে দিল্লিতে ভারতের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন নিয়ে যে পারসেপশন সেটাই আমরা এই দেশগুলোর কাছে তুলে ধরেছি। পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখে যেতেও আহ্বান জানিয়েছি। আমাদের নির্বাচন যে পুরোপুরি শান্তিতে ও আনন্দমুখর পরিবেশেই হবে সেটাও তাদের আশ্বস্ত করেছি।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বিশ্বের আরও বহু গণতান্ত্রিক দেশের মতোই বাংলাদেশেও নির্বাচন কোনও উৎসবের চেয়ে কম নয়। বাংলাদেশের মানুষও ওই উৎসবে শামিল হওয়ার জন্য এবং নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের জনপ্রতিনিধিকে বেছে নেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছেন।’
রাষ্ট্রদূতদের জন্য এই বিশেষ ব্রিফিংয়ের ঠিক আগে শুক্রবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ভারতে তার কাউন্টারপার্ট বিনয় মোহন কোয়াটরার সঙ্গে ‘ফরেন অফিস কনসালটেশনে’ মিলিত হন। দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যুর মধ্যে বছর তিনেক বাদে নির্ধারিত গঙ্গা চুক্তির নবায়ন এবং তিস্তার অমীমাংসিত ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে।