জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী বলেন, আওয়ামীলীগের প্রকৃত নেতা কর্মীদের মুল্যায় হচ্ছেনা। হাইব্রীড নেতারা মনে করছেন তারাই সব কিছু। এক সময় যারা মেহেরপুরে মিটিং মিছিল করেছেন আগামীতে তারাই থাকবে। হাইব্রীড নেতারা থাকবে না। তারা ভোট করবেনা। এইসব ত্যাগী নেতা কর্মীরাই ভোট করবে। তাই এসব ত্যাগী নেতা কর্মীদের মুল্যায়ন করতে হবে। প্রধান মন্ত্রী, দলের সেক্রেটারী ওবায়দুল কাদের ও কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন তৃণমুলের ত্যাগী নেতা কর্মীদের মুল্যায়ন করতে হবে।
জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭৪তম জন্মবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শুক্রবার বিকালে মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম রসুল বলেন, আজকের মঞ্চে চমক দেখেন । আরও চমক আছে, ঈদের পরে আরও চমক দেখানো হবে। সামসুজ্জোহা পার্কে সেই চমক দেখাতে পাবেন। যারা জেল খেটেছেন, বোমা খেয়েছেন, দিনে তিনবার হরতাল মিছিল করেছেন তাদের মুল্য নেই। আজকে যারা উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন, চারটি হাইব্রীড নিয়ে মন্ত্রী তার এমপিত্ব ফলাচ্ছেন। এজন্য তৃণমুলের কারো মুল্য নেই। সামনে নির্বাচন আসছে। মুল্য আছে কিনা তখন দেখা যাবে, কাদের মুল্য আছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেন, আপনাকে ক্ষমতায় বসতে হবে। উড়ে এসে জুড়ে বসা ওই এমপিকে মেহেরপুরবাসি দেখতে চাইনা। তিনি বলেন নেত্রীর কাছে আমরা যাবো। তাকে বলবো, আমাদের একটাই দাবী, মেহেরপুরে একজনকে বাদ দিয়ে কলাগাছকে নোমিনেশন দিলেও আমরা নৌকাকে জিতিয়ে আপনাকে উপহার দেবো। প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে উদ্যেশ্যে করে তিনি বলেন ওই একজনকে দিলে এখান থেকে নৌকা জিতবেনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেহেরপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি ও মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন, আওয়ামীলীগ কে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ৭১ এর পরাজিত সৈনিকরা যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তারা ঘাপটি মেরে বসেছিল। তারা দেশের ভিতরে এবং বাইরে থেকে বঙ্গবন্ধুর তিলে তিলে গড়া বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বানাতে চাই। কোনো ক্যান্টুমেন্ট থেকে আওয়ামীলীগের জন্ম হয়নি। রাজপথ থেকে এই দলের জন্ম। সেই আওয়ামীলীগকে হুমকী দেখানো হচ্ছে। আওয়ামীলীগকে আন্দোলনের ভয় দেখানো হচ্ছে।আওয়ামীলীগ হুমকী ও ভয় দেখানোকে ভয় পাইনা। আওয়ামীলীগের জন্মই হয়েছে রাজপথ থেকে।
তিনি বলেন, দল ও শেখ হাসিনা থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে। সেটা আমরা বিশ্বাস করি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে আমরা বীরের বেশে বেঁচে থাকবো। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিশ্বাস করেনি, মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি, লাল সবুজের পতাকা বিশ্বাস করেনি সেই পরাজিত সৈনিকরা আবারো ষড়যন্ত্র করছে।তাই মেহেরপুরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
রিটন বলেন, কোন পৈত্রিক সূত্রে নয়, যারা মেহেরপুরের প্রকৃত আওয়ামীলীগ তাদের মধ্যে থেকে মনোনয়ন দিতে হবে।জেলা পর্যায়ের তৃণমুলের নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। যারা দলকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, যারা দলকে ভাঙ্গিয়ে রাতারাতি কোটিপতি হচ্ছে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে আগামিতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবো। যারা দলের মধ্যে বিশৃংখলা করছে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে মুল্যায়ন করছেনা। তাদের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা আসকার আলী, মুজিবনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, মহজমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজানুর রহমান নান্নু, মুজিবনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান চাঁদু, আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুর রেজা, যুবলীগ নেতা নিশান সাবের, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর আল মামুন, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জুয়েলরানা, জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সোভন সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা, বিল্পব হোসনে।
এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট ইয়ারুল ইসলামের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি মিছিল বের করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট ইয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে সদর উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। র্যালী শেষে কেক কাটা হয়।