দেশের ক্রিকেটের আলোচিত ও সমালোচিত নাম নাসির হোসেন। একাধিক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ও কেলেংকারির জন্য তাকে ‘ব্যাড বয়’ তকমা দিয়ে থাকেন নিন্দুকেরা। অনেকে আবার পাকিস্তান ক্রিকেটের কিংবদন্তি ইমরান খানের চরিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে ‘প্লেবয়’ খেতাবও জুড়ে দেন তার নামের সঙ্গে। দীর্ঘদিন জাতীয় দল থেকে দূরে থাকা এই অলরাউন্ডার বিয়ে করে জীবনে থিতু হতে চেয়েছিলেন। সেটি আর পারলেন কই?
এবারের ভ্যালেন্টাইন ডেতে কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করে সুখের সংসার বাধার স্বপ্ন দেখেন নাসির। পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে আয়োজনের কমতি ছিলা। জমকালো আয়োজনে গায়ে হলুদ, বিয়ে ও সংবর্ধনার আয়োজন করেন। বিয়ের অনুষ্ঠানের মজার ভিডিও ধারণ করেন। এগুলো নিয়ে যখন নাসির ও ভক্ত শুভাকাঙক্ষীদের মাতামাতি তখন রীতিমত টর্নেডো বয়ে আসে এই ক্রিকেটারের জীবনে।
হঠাৎ নাসিরের স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী দাবি করে বসেন রাকিব হাসান নামে একজন। তামিমা তাকে ডিভোর্স না দিয়েই নাসিরের গলায় ঝুলে পড়েছেন এমন দাবি করে জিডি পর্যন্ত করে বসেন রাকিব। এ নিয়ে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল শুরু হয়। নাসির-তামিমার বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
সেই বিতর্কের অনলে ঘি ঢালেন নাসিরের সাবেক প্রেমিকা সুবাহ। তিনি দুদফায় ফেসবুক লাইভে এসে নাসিরের পাশাপাশি তামিমাকেও বিষোদগার করেন। দুজনের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সুবাহর অভিযোগ, নাসির ৭০-৮০ জন মেয়ের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে তাদের জীবন ধ্বংস করেছেন। ওই মেয়েদের হাড়নিঃশ্বাস লেগেছে তার প্রতি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
অনেকে নাসিরের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আবার কেউ কেউ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেইজ খুলে দ্বিধায় ফেলছেন নাসিরের সমর্থকদের। নাসির ও তামিমার নামে বহু ফেইক আইডি এরইমধ্যে খোলা হয়েছে।
তবে নাসির হোসেন জানিয়েছেন, ভেরিফায়েড পেইজ ব্যতীত তার আর কোনো যোগাযোগের মাধ্যম নেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে।
সেই ভ্যারিফাইড পেইজে নাসির ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের এ বিষয়ে সতর্ক করেন। নাসির লেখেন, ‘আমি পুনরায় বিশেষভাবে জানাচ্ছি যে, আমার এই ফেসবুক পেইজ ব্যতীত অন্য কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা প্রোফাইল বা পেইজ নেই। আমার স্ত্রী তামিমা সুলতানার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা প্রোফাইল বা পেইজ নেই। এই ফেসবুক পেইজ ব্যতীত অন্য যেসব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা প্রোফাইল বা পেইজ জালিয়াতির মাধ্যমে আমার অথবা আমার স্ত্রীর নামে তৈরি করা হয়েছে বা বর্তমানে বিদ্যমান আছে সেগুলো সবই নকল, যার প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতারণার মাধ্যমে আমাদের লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করা।’
ফেইক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া তথ্য বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়ে নাসির উল্লেখ করেন, ‘আমাদের নামে সাজানো সেসব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা প্রোফাইল বা পেইজ থেকে যেসব বিভ্রান্তিকর তথ্য আপনাদের কাছে প্রকাশ করা হচ্ছে তা মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। আমি আমার সব বন্ধু, ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধ জানাচ্ছি- আপনারা অনুগ্রহপূর্বক সেসব নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা প্রোফাইল বা পেইজ থেকে দেওয়া বিভ্রান্তিকর তথ্য-স্ট্যাটাস বিশ্বাস করবেন না এবং শেয়ার করবেন না।’
ভুয়া মাধ্যম থেকে পোস্ট করা তথ্যের জন্য তিনি ও তার স্ত্রী দায়ী নন বলে উল্লেখ করেন নাসির। জানান, ‘আমি অথবা আমার স্ত্রী যদি কোনো তথ্য বা সংবাদ আপনাদের নিকট প্রকাশ করতে চাই তবে আমরা এই ফেসবুক পেইজ এর মাধ্যমে অথবা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার প্রদানের মাধ্যমে তা প্রকাশ করব।’
নাসির দু:সময়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানান। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ‘এই সময়ে আমাদের পাশে থাকার জন্য এবং আমাদের সহায়তা করার জন্য আমি আমার সব ভক্ত, বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমি আশা করি আপনারা সবাই আমাদের পাশে থাকবেন এবং আমাদের প্রতি আপনাদের ভালোবাসা এবং সমর্থন অব্যাহত রাখবেন। সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।’
নাসিরের এই পোস্ট এরইমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। ৬৫ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী লাইক দিয়েছেন এতে। ২২ হাজার লোক মন্তব্য করেছেন। ২৯৭ জন শেয়ার করেছেন স্ট্যাটাসটি।