দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের ৭ জেলায় একযোগে বন্যা কবলিত হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আরও দুই জেলা আক্রান্ত হবে। বন্যা কবলিত জেলাগুলো হলো-কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, জামালপুর, সিলেট ও সুনামগঞ্জ বন্যা কবলিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের পূর্বাঞ্চল বা উজান থেকে নেমে আসা পানি, অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এ বন্যা দেখা দিয়েছে। তা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে।
এফএফডব্লিউসির বুলেটিনে বলা হয়, উল্লিখিত নদীগুলোতে বাড়তে পারে পানি প্রবাহ। ফলে উল্লিখিত জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বর্তমানে বিপৎসীমার সবচেয়ে উপরে বইছে যদুকাটা লরেরগড় পয়েন্টে ১২১ সেন্টিমিটার উপরে। ধরলা বইঠে ৪১ সেন্টিমিটার, তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার, ব্রহহ্মপুত্র নুনখাওয়া ও চিলমারিতে যথাক্রমে ২১ ও ৩৫ সেন্টিমিটার উপরে বইছে। যমুনা ফুলছড়ি ও বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ২৫ ও ১৮ সেন্টিমিটার উপরে এবং সুরমা কানাইঘাটে ৪০ ও কুশিয়ারা সুনামগঞ্জে ৪৬ সেন্টিমিটার উপরে বইছে।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আক্রান্ত হবে আরও দুই জেলা: এদিকে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের আরও বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যাকবলিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) বলেছে, আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়াও আক্রান্ত হবে। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা, ধরলা, সুরমা, কুশিয়ারা, যদুকাটা ৯টি পয়েন্টে বইয়ে বিপৎসীমার উপরে। সোমেশ্বরী, ভূগাই ও কংস ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টায় বিপৎসীমা পার করবে। সবমিলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটবে।
বিশেষজ্ঞের বক্তব্য: বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের মেঘালয়, আসাম, দার্জিলিংসহ পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে আগামী তিন ব্যাপক বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে নদ-নদীতে পানিপ্রবাহ আরও বেড়ে যেতে পারে। এ বন্যা স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদী বন্যা হতে পারে। অর্থাৎ বন্যার মেয়াদ ১৫দিনও হতে পারে। এই বন্যার পানি একদিকে মেঘনার দিকে এবং আরেকদিকে যমুনা হয়ে পদ্মায় আসতে পারে। এতে মধ্যাঞ্চল বা ঢাকা, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হতে পারে।
যুগান্তর রিপোর্ট