কাঙ্খিত সেবা মিলছে না ঝিনাইদহ পৌরসভায়। ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর নতুন বাংলাদেশে এখনো ঝিনাইদহ পৌরসভার বহাল তবিয়তে চাকরী করছেন ফ্যাসিবাদের দোষররা। ঝিনাইদহ পৌরসভার সাধারণ নাগরিকরা মনে করেছিলেন নতুন বাংলাদেশে হয়ত তারা কাঙ্খিত সেবা পাবেন কিন্তু পৌরসভার নাগরিকরা এখনো সেই সেবা পাচ্ছেন না। সেবা নিতে গিয়ে এখনো পদে পদে দিতে হচ্ছে ঘুষ আর হতে হচ্ছে হয়রানি। আগের মতই এখনো সেবা নিতে দিতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখনো বহাল তবিয়তে চাকরী করছেন চেক জালিয়াতি মামলার আসামি, নৌকা প্রতিক নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন করা ঝিনাইদহ পৌর সভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা চাঁদ আলী। এছাড়াও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও গত ১৫ বছর ধরেই কিন্তু এখনো আছে বহাল তাবিয়াতে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইজিবাইক চালক বলেন, গত বছর অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ইজিবাইকের লাইন্সেস করেছি। এই বছর আবার ইজিবাইকের লাইসেন্স করতে গিয়ে আগের মত ঘুষ দাবি করা হচ্ছে। এই জন্য আর ইজিবাইকের লাইন্সেস করি নি।
রহিম নামের এক বাসিন্দা বলেন, এক হাসিনার পতন হয়ে কোন লাভ নেই। হাসিনার অনুসারীরা অনেকেই এখনো পৌরসভায় চাকরি করছে। আগের মতই এখনো সিন্ডিকেট তৈরি করে নাগরিকদের হয়রানি করেই যাচ্ছে। পৌরসভা থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের এখনই বিতাড়িত করতে হবে।
এদিকে আনারুজ্জামন আজাদ নামের এক নাগরিক, পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে গত ১৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ঝিনাইদহ পৌরসভার বিতর্কিত নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দীন দীর্ঘ ১৮ (আঠারো) বছর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মনোনীত বিনা ভোটে মেয়রের তত্ত্বাবধানে অবৈধ ভাবে পৌরসভার রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ না করে বিনা ভোটের মেয়রের সাথে যোগ সাজস করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। ইতিপূর্বে সাধারণ জনগণ কোন অভিযোগ কারার সাহস পায়নি। পৌরসভা পরিদর্শন করে দেখা যায় দীর্ঘ ১৮ (আঠারো) বছর সরকারের বরাদ্দকৃত বিভিন্ন প্রকল্পের ও এডিবি এর কোটি কোটি টাকার কোন কাজ হয় নাই। একটু বৃষ্টিতে শহরের পানি নিষ্কাশন হয়না। এছাড়াও বাজারের মধ্যের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ।
রাশেদ নামের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, মশার উৎপাতে এলাকার মানুষ নাজেহাল। পৌরসভা থেকে মশক নিধনের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হলেও তার কোন কার্যক্রম চোখে পড়ে না। শহরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক বাতিগুলো এখনও নষ্ট হয়ে আছে। এছাড়াও অভিযোগ আছে সড়কের বাতি কেনার জন্য ব্যাপক টাকা আত্মসাৎ করেছে কর্মকর্তারা। দ্রুত এসব দুর্নীতিবাজ স্বৈরাচারের সমর্থকদের পৌরসভা থেকে বিতারিত করা হোক। তবেই নতুন প্রজন্মের স্বাধীন বাংলাদেশের সুফল পাবে বাসিন্দারা।
অভিযোগের ব্যাপারে প্রকৌশলী কামাল হোসেন বলেন, যেসব অভিযোগের কথা বলছেন তার কোন সত্যতা নেই। নিয়ম মেনেই সকল কাজ করা হয়। আর কাজ করার নির্দেশ দেন পৌরকর্তৃপক্ষ। আমাদের কিছুই করার নেই।
এ ব্যাপারে পৌরসভার প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, পুর্বে কি হয়েছে তা আমি বলতে পারব না। পৌরসভার প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে কোন প্রকার অনিয়ম করার সুযোগ নেই।