পুলিশি পাহারায় অবসর যাপন করছেন বহুবিধ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. সোবহান। অবসরে যাওয়ার পরও নিজ বাড়িতে সার্বক্ষণিক কড়া পুলিশ পাহারায় পরিবার নিয়ে অবস্থান করছেন তিনি।
এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। একজন প্রমাণিত দুর্নীতিবাজকে কেন সরকার রাষ্ট্রীয় খরচে পুলিশি নিরাপত্তা দিচ্ছে-তা নিয়েও কথা বলেছেন শিক্ষক-সুধীজনরা।
৬ মে ছিল প্রফেসর আব্দুস সোবহানের মেয়াদ পূর্তির শেষ দিন। তবে বিদায় নেওয়ার এদিনটাও সম্মানজনক ছিল না তার জন্য। ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে শেষ কর্মদিবসে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিভিন্ন পদে এক স্বাক্ষরে ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়ে দেশব্যাপী বিতর্কের শীর্ষে চলে আসেন তিনি। তোপের মুখে কড়া পুলিশ পাহারায় শেষবারের মতো ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হন ড. সোবহান।
এরপর ক্যাম্পাসের অদূরে চৌদ্দপাই এলাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিজস্ব আবাসিক এলাকা বিহাসে নিজের বাড়ি ‘জুবাইদা ম্যানশন’-এ গিয়ে ওঠেন তিনি। তবে এখানেও স্বস্তিতে নেই সদ্য সাবেক এই উপাচার্য।
সুরক্ষিত অভিজাত আবাসিক এলাকা হলেও তার বাড়িতে বসানো হয়েছে সার্বক্ষণিক পুলিশের বিশেষ পাহারা। মতিহার থানার এক এসআইয়ের তত্ত্বাবধানে একদল পুলিশ পালাক্রমে প্রতিদিনই ভোর থেকে গভীর রাত অবধি সোবহানের বাসা ঘিরে থাকেন। পুলিশের কড়া অবস্থান থাকছে প্রধান ফটকের ভেতরেও। ক্যাম্পাস থেকে বিদায়ের পর থেকেই চলছে এ অবস্থা।
বিতর্কিত অবসরের পরও সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহারা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিহাসে ড. সোবহানের প্রতিবেশী ও রাবি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন খান। তিনি বলেন, অতি সাধারণ বিবেচনাতেও কোনো দুর্নীতিবাজ কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারেন না। সোবহান সাহেব দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হয়েছিলেন দুর্নীতির আশ্রয়েই। ক্ষমতায় থেকে নিজে নানা অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন ও অন্যদের দিয়েছেন।
এখন অবসরে এসেও থাকছেন পুলিশের পাহারায়। বিহাসের মতো সুরক্ষিত আবাসিক এলাকায় পুলিশের বিচরণ আমাদের লজ্জায় ফেলেছে। তিনি অবিলম্বে ড. সোবহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার দাবি করেন।
এদিকে ড. সোবহানের বাসায় পুলিশের পাহারা বসানোর বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, উনার (সোবহান) বাসায় বোধহয় পুলিশ পাহারা বসানো হয়নি। হয়তো পুলিশ তার বাসার দিকে ঘোরাফেরা করতে গিয়ে কৌতূহলবশত বাসাটি দেখতে গিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে জানতে ড. আব্দুস সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।