পঞ্চাশোর্ধ লাল বানু প্রায় ৩০বছর ধরে বসবাস করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের অস্থায়ী বাসিন্দা। তিনি গাইবান্ধার বাসিন্দা হলেও নির্মম নিয়তির শিকার হয়ে আজ তাকে বসবাস করতে হচ্ছে এখানে।
মোবারকপুর ইউনিয়নে অন্যের করুণায় পাওয়া এক টুকরো মাটির উপর পলিথিনের ঘর তৈরি করে কোনো রকমে বসবাস করছেন। তার ওপর আবার বাড়তি যোগ হয়েছে মেয়ে ও ৬ বছর বয়সের নাতির।
জানা গেছে, ভিক্ষা করেই চলে লালবানুর সংসার। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাস ঝুঁকি এড়াতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ঘর থেকে বের হতে পারছেন না তিনি।
অন্যদিকে ন্যাশনাল আইডি কার্ড (এনআইডি) না থাকায় জনপ্রতিনিধিদের থেকেও কোনো সাহায্য পাচ্ছেন লালবানু। ফলে ভিক্ষা করতে না পারায় মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে তার।
লালবানু এই প্রতিবেদককে জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে মাদকাসক্ত স্বামী নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তাকে। এরপর জীবন চালাতে হাতে ভিক্ষার থালা নিয়ে ঘুরতে থাকেন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। একসময় ভিক্ষা করতে করতে চলে আসেন শিবগঞ্জের মোবারকপুর এলাকায়।
তিনি আরও জানান, তার কথা শুনে জোহরপুর গ্রামের আবু তালেবের বাড়ির পেছনে আম বাগানের এক কোণে জায়গার ব্যবস্থা করে দেন স্থানীয়রা। সেখানেই পলিথিনের ঘর বানিয়ে ভিক্ষা করে কোনো রকম সংসার চালাচ্ছিলেন। এমন সময় তার সংসারে যোগ দেয় স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে লাবনি ও ৬ বছর বয়সী নাতি আসাদ।
লালবানু জানান, এখানে আসার পর একটা জাতীয় পরিচয়পত্র- এনআইডি কার্ড বানিয়ে দেয়ার জন্য অনেকবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু কেউ তাকে তা বানিয়ে দেয়নি। এছাড়া তিনি এখানকার ভোটার না হওয়ার কারণে কেউ তাকে ত্রাণ দেয় না। ফলে কি খেয়ে বাঁচবেন এনিয়ে হতাশায় দিন কাটছে তার।
এ বিষয়ে মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, তিনি লালবানুর বিষয়ে জানেন যে, তিনি ভিক্ষা করেই চলেন। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সামনে বরাদ্দ পেলে তাকে অনুদান দেয়ার চেষ্টা করবেন তিনি।
সুত্র- বাংলাদেশ প্রতিদিন