বেসরকারী এনজিও আশা’র গাংনী উপজেলার বাওট ব্রাঞ্চের বাবুর্চি হৃদয়কে জীবিত অথবা মরদেহ উদ্ধারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবার।
বুধবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হৃদয়ের স্ত্রী কনা খাতুন। এসময় তার শিশু কন্যা আনিশা খাতুন(৩), পিতা মিন্টু হোসেন ও মা আক্তার বানু উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।
মায়ের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন হৃদয়ের স্ত্রী কনা খাতুন। তিনি বলেন, ঘটনার দুই দিন পার হয়ে গেলেও হৃদয়কে জীবিত অথবা মৃত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তিনি অভিযোগ করেন হৃদয় নিখোঁজ থাকলেও তাকে বের করার জন্য পুলিশ আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। বামন্দী পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ আমাদের বাড়িতে গিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ হুমকী ধামকী দিচ্ছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, এনজিও সংস্থা আশা’র বাওট ব্রাঞ্চের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম ও কিস্তি অফিসার সামিয়ার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আমার ছেলে তাদের অনৈতিক সম্পর্ক দেখে নিষেধ করে। এঘটনায় ম্যানেজার আমিনুল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর ও দেখে নেওয়ার হুমকী দেন।
হৃদয় তাদের দুজনার অসামাজিক কাজের একটি ভিডিও ধারণ করেছিলেন। সেই ভিডিও নেওয়ার জন্য ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম হৃদয়কে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছিল।
১ অক্টোবর বাড়ি থেকে আশা সংস্থার বাওট অফিস নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বের হয়ে আসে হৃদয়। তারপর থেকে হৃদয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরের দিন সকালে আশা অফিসে খুঁজতে এসে অফিসের ভিতরে রক্ত এবং একটি বটি উদ্ধার করে লোকজন। এর আগে আশা অফিসের লোকজন সবাই পালিয়ে গেলেও স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম। স্থানীয় লোকজন তাকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
এসময় হৃদয়ের স্ত্রী কনা খাতুন বলেন, আমার স্বামী আমাকে বলেছিল ওই ম্যানেজার হুমকী দিয়েছে। সে আমাকে বলেছে তোকে আমি বাঁচতে দেবোনা। তোর ভিটিতে ঘুঘু চরাবো। তোর লাশটাও তোর পরিবার পাবেনা।ওই ভিডিও নেওয়ার জন্য আমার স্বামীর মোবাইল নং এ অপরিচিত মোবাইল নং থেকে ফোন দিতো। তারা বলতো বাওট বাজার থেকে তোকে মাইরি ফেলাবো।
তিনি ওই দিনকার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তার সাথে আমার রাত ৮ টার দিকে প্রথম কথা হয়েছে। সে বলেছিল কারেন্ট নাই। আমি নিচে বসে আছি। পরে রাত ১১ টার দিকে আবারও ফোন দিয়ে বলেছিল আমার কিছু ভাল লাগছেনা। ঘুম আসছেনা। তারপর আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে উঠে আর তার ফোনে ঢুকতে পারিনি। ফোন বন্ধ পেয়েছি।
তিনি বলেন পুলিশ এবং আশা এনজিওর লোক আমাদের পরিবারকে চাপ দিচ্ছেন আমার স্বামীকে বের করার জন্য। তিনি দাবী করেন আমার স্বামীকে পুলিশ উদ্ধার করে দিক। সে যদি অন্যায় করে তার যে সাজা হবে দিক। আর যদি তার লাশ পাই তাহলে আমি ওই এনজিওকে দায়ী করবো।
এঘটনায় আক্তার বানু তার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছেন। যার নং ১৬২, তারিখ ০৪/১০/২০২২ ইং।