দলীয় গঠনতন্ত্র অমান্য করে ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন করেছেন। গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী এ কমিটি অবৈর্ধ, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে কাজী মনিরুল ইসলাম মনু এটাকে উন্নয়ন কমিটি দাবি করে বলেছেন, আমি যে উন্নয়ন করব, তাদের মাধ্যমে করা হবে।
জানা গেছে, গত ১২ নভেম্বর উপনির্বাচনে ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বিজয়ী হন। এরপর থেকেই প্রয়াত সংসদ সদস্য (এমপি) হাবিবুর রহমান মোল্লার অনুসারীদের কোণঠাসা করতে তৎপর হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ‘এমপি লীগ’ গঠনে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর। দলের গঠনতন্ত্রে না থাকলেও তিনি ডেমরা থানার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন করেছেন।
৩০ নভেম্বর এমপি স্বাক্ষরিত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে আবদুল আজিজ প্রধানকে। চারজন যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় জয়নাল আবেদীন, চাঁন মিয়া, নাজির আহমেদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেনকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে হাজী সামসুদ্দিন খানকে। তিনজনকে করা হয়েছে যুগ্ম সদস্য সচিব। তারা হলেন, শাহাদাত হোসেন মোল্লা, আবদুর রব ও আজিজুর রহমান। এই কমিটি গঠনের পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকা-৫ আসনের এমপি ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি অনুমোদনের তথ্য পেয়েছি। একজন এমপি কোনোভাবেই ওয়ার্ড কমিটি অনুমোদন দিতে পারেন না। এটা গঠনতন্ত্রবিরোধী ও দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। ঢাকা মহানগরে ওয়ার্ড কমিটি অনুমোদন কেবল মাত্র মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট থানার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অনুমোদন করে থাকেন। এখানে গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করা হয়েছে।
সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আসলে ওটা আওয়ামী লীগের কমিটি নয়, উন্নয়ন কমিটি। আমি যে উন্নয়ন করব, তাদের মাধ্যমে করব।’ ‘প্যাডে লেখা আওয়ামী লীগ’ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লেখাটা ভুল ছিল। ওদের বলেছি, সংশোধন করে নিয়ে আসতে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগরের একাধিক নেতা জানান, রাজধানীতে ১৮ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, কেউ এমপি লীগ বা উন্নয়ন কমিটি গঠন করেনি। কাজী মনিরুল ইসলাম এমপি হয়েই দীর্ঘদিন ধরে যারা দল করছেন কিন্তু অন্যের অনুসারী ছিলেন তাদের কোনঠাসা করার মিশনে নেমেছেন। এতে করে দলের অভ্যন্তরে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।