ইউটিউবের কনটেন্ট সরানো বা সীমিত করার প্রক্রিয়ার পেছনে কাজ করে কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিন কনটেন্ট নির্মাতাদের বিরুদ্ধে যে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ তুলে মামলা করা হয়েছিল, তা নাকচ করে দিয়েছে মার্কিন আদালত।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রানসিস্কো আদালতের বিচারক ভিন্স চাবরিয়া বলেন, ইউটিউবের অ্যালগরিদম ‘গাত্রবর্ণের ভিত্তিতে’ বৈষম্য করতে পারে, এমন সম্ভাবনা থাকলেও মামলার বাদীপক্ষের দাবিতে কোনো ‘বৈষম্যের ছাপ’ খুঁজে পাওয়া যায়নি। অশ্বেতাঙ্গ ইউটিউব ব্যবহারকারীদের পক্ষে এই ক্লাস অ্যাকশন মামলা দায়ের করা হয়েছিল ২০২০ সালের জুনে। এর এক মাস আগে মিনিয়াপলিস অঙ্গরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনাটি ঘটলে সে সময় গোটা যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগে বিক্ষোভ হয়েছিল।
বাদীপক্ষের ৯ জন বলেন, একই ধরনের কনটেন্ট আপলোড করার পরও শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তাদের ভিডিওতে বেশি নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছিল ইউটিউব। আর তা প্ল্যাটফরমের কনটেন্ট মডারেশন ব্যবস্থার ‘বর্ণ নিরপেক্ষতা’ সংশ্লিষ্ট নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তবে বিচারক বলেন, ইউটিউব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তাদের অ্যালগরিদম পরিচয়ের ভিত্তিতে বৈষম্য করবে না। তবে, তার মানে এই নয়, অ্যালগরিদম তাদের একেবারে ছাড় দিয়ে দেবে।
তিনি আরো যোগ করেন, বাদীপক্ষ যেসব ভিডিও নমুনার ওপর ভিত্তি করে মামলা করেছে, তা খুবই নগণ্য। বরং এগুলো তাদের মামলাকে দুর্বল করেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, মামলার এক বাদীর দেখানো ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেহারা তৈরির ‘মেকআপ টিউটোরিয়াল’-এ ইউটিউবের সীমাবদ্ধতা দেওয়ার কারণ, এতে বাদীপক্ষ শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী দল ‘কু ক্লাক্স ক্লান’-এর কথা উল্লেখ করেছেন ও মেকআপের হালকা রংকে সাদা চামড়ার আধিপত্যের রং হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, এতে বাদীপক্ষ ‘নিশ্চিতভাবে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের নিয়ে রসিকতা করার চেষ্টা করেছেন। তবে ইউটিউবের অ্যালগরিদম সেটা বৈষম্য হিসেবেই দেখবে। চাবারিয়া আরো বলেন, ‘ইউটিউবের কমিউনিটি গাইডলাইনের সাম্প্রতিক আপডেটে বাদীপক্ষের কয়েকটি অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আর ইউটিউবের বিরুদ্ধে এমন প্রতিশ্রুতি ভাঙার অভিযোগ তোলা যাবে না, যে প্রতিশ্রুতি তারা দেয়নি’।
এই প্রসঙ্গে বাদীপক্ষের আইনজীবীদের মন্তব্য চেয়েছিল; কিন্তু তারা সাড়া দেননি। এর পাশাপাশি ইউটিউব ও তাদের আইনজীবীদের কাছ থেকেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। মামলাটি খারিজ করে একে চূড়ান্ত রায় হিসেবে ঘোষণা দেন চাবারিয়া। এর মানে, এ মামলায় আপিলের সুযোগ নেই। এর আগেও পাঁচবার আপিল করেছিল বাদীপক্ষ।